ভারতের নাগপুরে তাপমাত্রা ৫৬ ডিগ্রি!

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


গত ৩০ মে ভারতের নাগপুরের তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বলার অপেক্ষা রাখে না, ভারতের ইতিহাসে এটাই এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। পৃথিবীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থেকে মাত্র ০.৭ ডিগ্রি কম।

দুদিন আগেই ভারতের সর্বকালীন সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড গড়েছিল দিল্লি। দেশবাসীকে চমকে দিয়ে রাজধানীর তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৫২.৯ ডিগ্রিতে। এবার দিল্লির রেকর্ড ভেঙে ফেলল মহারাষ্ট্র। সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর, গত ৩০ মে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার নাগপুরের তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বলার অপেক্ষা রাখে না, ভারতের ইতিহাসে এটাই এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এবং পৃথিবীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থেকে মাত্র ০.৭ ডিগ্রি কম।

শুধু গরম বললে ভুল বলা হবে, গত প্রায় এক মাস ধরে কার্যত তপ্ত কড়াইয়ে পরিণত হয়েছে গোটা উত্তর ভারত। এই ভাজা পোড়া গরমে নাজেহাল অবস্থা দেশবাসীর। ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র রিপোর্ট অনুযায়ী, মৌসম ভবনের তরফ থেকে নাগপুরে ৪টি অটোমেটিক ওয়েদার স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। তার একটিতেই তাপমাত্রার পারদ ওঠে ৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত বিশ্বের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়াতে। ১৯১৩ সালের ১০ জুলাই এখানকার তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৫৬.৭ ডিগ্রিতে। অর্থাৎ পৃথিবীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থেকে মাত্র ০.৭ ডিগ্রি পিছিয়ে ছিল নাগপুর।

এর পাশাপাশি সোনেগাঁওয়ে ৫৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যদিও তাপমাত্রার এই রিপোর্ট একেবারে সঠিক বলে মানতে রাজি নন বিশেষজ্ঞরা। আঞ্চলিক আবহাওয়া দফতরের কর্মকর্তাদের দাবি, ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেলেই অটোমেটিক ওয়েদার স্টেশনগুলোর সেন্সরে গোলযোগ দেখা যাচ্ছে। ফলে তাপমাত্রার পারদ যা দেখাচ্ছে তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে ভারত সরকারও।

উল্লেখ্য, গত বুধবার ভারতের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল দিল্লিতে। সেখানকার মুঙ্গেশপুর এলাকার তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৫২.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এই ঘটনার রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল শুরু হয় গোটা দেশে। তবে এই রিপোর্ট আদৌ সঠিক কিনা তা নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত। তবে ভয়াবহ এই তাপমাত্রার রেকর্ড ঠিক হোক বা ভুল। পূর্ব, উত্তর ও মধ্য ভারত যে প্রবল গরমে পুড়ছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তীব্র গরমের প্রকোপে এখন পর্যন্ত ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিহারের আওরঙ্গাবাদে দুঘণ্টায় প্রাণ হারান ১৬ জন। পরে আরো ১৬ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। সব মিলিয়ে আওরঙ্গাবাদে ১৭, আরাতে ৬, পাটনায় ১, গয়া ও রোহতাসে ৩ জন করে মারা গেছে। বক্সারে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। সব মিলিয়ে কেবল বিহারেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩২ জনের প্রাণ গিয়েছে গরমের দাপটে।

এদিকে ওড়িশার রাউরকেল্লায় দাবদাহে প্রাণ হারিয়েছেন ১০ জন। একই কারণে ঝাড়খণ্ডের পালামৌ ও রাজস্থানে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুরে মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। এর আগে বিহারের দ্বারভাঙ্গার বাসিন্দা ৪০ বছরের এক ব্যক্তি দিল্লিতে হিট স্ট্রোকের শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে এবার তাপপ্রবাহে ভারতের এই অংশে মৃত্যু হলো ৫৪ জনের।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *