ত্রিদেশীয় সফরের অংশ হিসেবে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু দুই দিনের সফরে আজ ঢাকা আসছেন। এর আগে তিনি ভারত ও শ্রীলঙ্কা গিয়েছেন। বাংলাদেশ সফরে জলবায়ু সঙ্কট, অর্থনৈতিক বন্ধন গভীরতর করাসহ যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সহযোগিতা নিয়ে ডোনাল্ড লু আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। অন্যদিকে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছেন, এ সফরে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, নিরাপত্তাসহ সম্পর্কের সার্বিক দিক নিয়ে আলোচনা হবে।
ডোনাল্ড লু সফরের সময় পররাষ্ট্রসচিবের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সাথে। তিনি নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সাথেও মতবিনিময় করবেন।
এ ব্যাপারে মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, নতুন সরকার গঠনের পর ডোনাল্ড লু প্রথমবারের মতো ঢাকা আসছেন। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো আলোচনার জন্য বেশ কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। এ সব প্ল্যাটফর্মের সংলাপ কিভাবে আবারো শুরু করা যায় সেটা নিয়ে আলাপ হবে। যুক্তরাষ্ট্রেও চলতি বছরের শেষ নাগাদ নির্বাচন হবে। তাই এটি তাদের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সময়। তিনি বলেন, ডোনাল্ড লুর সফরে মূলত কর্মকর্তা পর্যায়ে আলোচনা হবে। এ আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যু অবশ্যই থাকবে। একটি নিরাপদ ও স্থিতিশীল সীমান্ত আমাদের কাম্য। পার্শ্ববর্তী দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ইস্যু যাতে আমাদের ওপর প্রভাব না ফেলে তা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ে গুরুত্বের সাথে দেখে।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে ও পরের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখন একটি স্থিতিশীল সরকার রয়েছে। বাংলাদেশের সাথে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্র সরকার এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সব দেশই নতুন সরকারের সাথে কাজ করতে চায়। লুর ঢাকা সফরের লক্ষ্যও একই।
অন্যদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার জয়কে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বন্ধুপ্রতিম সব রাষ্ট্র। এ সব রাষ্ট্র বর্তমান সরকারের সাথে সম্পর্ক আরো দৃঢ় করতে চায়। বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো। এই সম্পর্কে আরো উচ্চতায় নিয়ে যেতে বাংলাদেশে আসছেন ডোনাল্ড লু। তার সফরে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করার চেষ্টা আমাদের থাকবে।
গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে একসাথে কাজ করতে আগ্রহী তার সরকার। একই মাসের শেষে ঢাকা সফর করেন বাইডেনের বিশেষ সহকারী ও দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক এইলিন লাউবাখেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। ওই প্রতিনিধিদলে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা ইউএসএআইডির সহকারী প্রশাসক মাইকেল শিফার এবং দেশটির উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আখতারও ছিলেন। নতুন মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর এটি যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রথম সফর ছিল। এরপর দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডান লিঞ্চের নেতৃত্ব একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে ঢাকা সফর করে গেছেন।