বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে হত্যা মামলার এক আসামিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে আরেক হত্যা মামলার আসামি। নিহতের নাম মোতাহার হোসেন (৬০)। তিনি বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাউনিয়া গ্রামের রফিজউদ্দিনের ছেলে।
হামলাকারী আসামির নাম তরিকুল ইসলাম (২৫)। তিনি পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামের ফারুক সরদারের ছেলে। হত্যায় অভিযুক্ত ও নিহত উভয়েই হত্যা মামলার আসামি। অভিযুক্ত তরিকুল ইসলাম মানসিকভাবে কিছুটা বিকারগ্রস্ত বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
রোববার (১৪ এপ্রিল) ভোরে হাসপাতালের নিচতলার প্রিজন সেলে মোতাহারসহ দুই আসামিকে বেধড়ক পেটান আসামি তরিকুল ইসলাম। হামলায় আহত আরেকজন হলো মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারচর গ্রামের গৌরাঙ্গ মন্ডলের ছেলে অজিত মন্ডল। আহত হওয়ার পর দুজনকে চতুর্থ তলার সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর একটায় মোতাহার হোসেনের মৃত্যু হয়।
ঘটনার সময় সেলের তালার চাবি নিয়ে একজন বাইরে নাশতা করতে গিয়েছিলেন। তাই দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা দ্রুত সময়ে প্রিজন সেলে ঢুকতে পারেননি।
বরিশাল নগরের কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আরিফুল হক বলেন, হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন আসামি মানসিক রোগী তরিকুল ইসলাম অপর দুই আসামিকে (মোতাহার হোসেন ও অজিত মন্ডল) স্যালাইনের স্টিলের স্ট্যান্ড দিয়ে পিটিয়েছেন। এতে দুইজন আহত হন। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডেপুটি জেলার নুর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, প্রিজন সেলে একটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। এ বিষয়ে আজ কিছু বলতে পারব না।
সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন
জানা গেছে, প্রিজন সেলের দায়িত্বে এক নায়েক ও দুই কনস্টেবল ছিলেন। মানসিক রোগীসহ তিনজন প্রিজন সেলের একটি কক্ষে ছিলেন। ভোরে আকস্মিকভাবে মানসিক রোগী অপর দুই আসামিকে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ট্যান্ড দিয়ে বেধড়কভাবে পেটাতে থাকেন। এতে মোতাহারের মাথাসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম হয়। অজিত আঘাত পেলেও ততটা গুরুতর নয়। ঘটনার সময় সেলের তালার চাবি নিয়ে একজন বাইরে নাশতা করতে গিয়েছিলেন। তাই দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা দ্রুত সময়ে প্রিজন সেলে ঢুকতে পারেননি।
হাসপাতাল প্রশাসন বলছে, মানসিক প্রতিবন্ধী ওই রোগীকে নিয়মানুযায়ী হাসপাতালের মানসিক ওয়ার্ডে রাখার কথা। সেখানে রাখলে এমনটা হতো না। কিন্তু সেখানে না রেখে সুস্থ মানুষের মধ্যে এভাবে রাখাটা আদৌ উচিত হয়নি কারা কর্তৃপক্ষের। রাখলেও সেভাবে ব্যবস্থা রাখা উচিত ছিল।
বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার রত্না রায় বলেন, কী ঘটনা ঘটেছে তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। আমরা ঘটনা তদন্ত করছি। তদন্ত শেষ করে বলতে পারব। দায়িত্বরতদের অবহেলার বিষয়টিও তদন্ত করা হচ্ছে।