রমজান আলী রুবেল, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি. সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ করাতকল। বিভিন্ন সংরক্ষিত বন থেকে গাছ কেটে এনে এই করাতকলগুলোতে বিক্রি করছে চোরাকারবারিরা। নিয়মিত কাঠ আসছে এবং তা ফাড়াইয়ের কাজ চলছে সেগুলোতে। বন উজাড় হওয়ার পেছনে এটাও অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, করাতকল চালানোর জন্য সরকারের বনবিভাগ থেকে লাইসেন্স নেওয়ার কথা থাকলেও বেশিরভাগ ব্যবসায়ী এই আদেশ মানছে না।
বন বিভাগের উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তাদের কাছে পাওয়া তথ্যানুসারে, শ্রীপুর উপজেলায় একাধিক করাতকল রয়েছে। যার মধ্যে ১৯ টি করাতকল বৈধভাবে চলছে। বাকিগুলোর লাইসেন্স নেই, চলছে অবৈধভাবে।
বন বিভাগ সূত্রে পাওয়া তথ্যানুসারে, শ্রীপুর উপজেলায় শতাধিক করাতকলের মধ্যে বৈধ করাতকলের সংখ্যা প্রায় ১৯ টি, আরো ১০ টি অনুমতির প্রক্রিয়া ধিন।
সরেজমিনে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও শিমলা পাড়া বিট এলাকার নিজ মাওনা বাজারে একটি করাতকলে প্রকাশ্যে গজারি কাঠ ভাঙ্গানো হচ্ছে শুধু তাই নয় এই ইউনিয়নের শৈলাট, বাঁশবাড়ি, গোতার বাজার গাজীপুর বাজার সহ দশটি স্থানে সংরক্ষিত বনের ৩/৪কিলোমিটারের মধ্যে বেশ কয়েকটি করাতকল অবৈধভাবে গড়ে উঠছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের দুইশ’ মিটারের মধ্যেও গড়ে উঠেছে অবৈধ করাতকল। নিয়মিত কাঠ ফাড়াইয়ের কাজ চলছে সেগুলোতে।
গাজীপুর ইউনিয়নের আবুল কাশেম নামে এক প্রভাবশালী কাঠ ব্যবসায়ী বিধিমালার তোয়াক্কা না করে নিজ মাওনা বাজারে প্রকাশ্যে করাতকলে গজারি কাঠ ভাঙাচ্ছেন।
নিজ মাওনা এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, এই এলাকায় অনেক আগে থেকেই প্রভাবশালীরা সরকারের খাস জমি থেকে অবৈধভাবে কাঠ চুরি করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাচার করছে। এবং কাঠ ব্যবসায়ী আবুল কাশেম গাজীপুর ইউনিয়নের করাতকল মালিক সমিতির সভাপতির নেতৃত্বে তাদের কোনও ধরনের কাগজপত্র না থাকলেও তার প্রভাব খাটিয়ে করাতকল চালিয়ে যাচ্ছে।
শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো.মোখলেছুর রহমান, বাংলাদেশ সমাচারকে বলেন, অবৈধ করাত কল বন্ধের জন্য শ্রীপুর রেঞ্জের আওতাধীন যতগুলি বিট অফিস রয়েছে, প্রত্যেকটা বিটি অফিসারের কাছে, অবৈধ করাত কল বন্ধ করে দেওয়ার জন্য, কিছুদিন আগে চিঠি দেওয়া হয়েছে, চিঠি পেয়ে উপজেলায় প্রায় অর্ধসতাধিক করাত কল বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো এবং যারা অবৈধ করাত কল এখনো চালু রেখেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে ভাওয়াল গড় বাঁচাও আন্দোলনের মহাসচি রিপন আনসারী বাংলাদেশ সমাচার কে বলেন যতদিন পর্যন্ত অসাধু বন কর্মকর্তা অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ী দালাল শ্রীপুর উপজেলায় থাকবে ততদিন পর্যন্ত বন রক্ষার্থে বন বিভাগ কর্মীদের বাধার সম্মুখীন হতে হবে।
ঢাকা বন বিভাগ উদ্বোধনও কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই আগে অসাধুবন কর্মকর্তাদের কে এবং অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ীদের কে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন তাহলেই শ্রীপুরের বনাঞ্চল বাঁচবে বলে আশা করি।