গাজীপুর : গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক তেলির চালা এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডারের আগুনে ৩৫ দ্বগ্ধ হয়েছেন।
বুধবার (১৩ই মার্চ) ইফতারের আগ মুহুর্তে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে স্থাণীয় শফিক খানের বাড়িতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
রাত পৌনে ৮টার দিকে দগ্ধ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে নেয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে নারী-শিশুসহ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে জরুরি বিভাগে ৩৫ জন এসেছে। জরুরি বিভাগে তাদের চিকিৎসা চলছে। তাদের কার শরীরের কত শতাংশ দগ্ধ হয়েছে সে বিষয়টি এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এঘটনায় মো. মাইদুল ইসলাম, মো. কুটি, মো. আরিফুল, মো: ইয়াসিন, মো. সোলেমান, মো. আকাশ, নূর নবী, মো. নিরব, মোছাম্মৎ শিল্পী, মো. নাঈম, মাহবুব, মশিউর ও মোতালেবসহ আরো অনেকেই আহত হয়েছেন। দ্বগ্ধদের মধ্যে একই পরিবারের ৫জন রয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি জানান, কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক তেলির চালা এলাকায় শফিক খানের বাড়িটি স্থানীয় কয়েকটি কারখানার শ্রমিকদের কাছে ভাড়া দেয়া হয়েছে। ওই বাড়ির নির্দিষ্ট রান্না ঘরের ভাড়াটিয়া কারখানা শ্রমিকরা রান্না করছিলেন। আজ বুধবার ইফতারের আগ মুহুর্তে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে একটি পরিবারের গ্যাস সিলিন্ডারের গ্যাস ফুরিয়ে গেলে নতুন আরেকটি সিলিন্ডারে সংযোগ দেয়ার সময় নতুন সিলিন্ডারে আগুন ধরে যায়। এ অবস্থায় সিলিন্ডারটি রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়। আর এতে রাস্তায় থাকা লোকজনও দগ্ধ হয়। যেহেতু এটা শ্রমিক কলোনি, তাই এই অঞ্চলটি খুবই জনবহুল। ইফতারের আগে মাটির চূলায় রাস্তার ওপর রান্না করছিলেন কেউ কেউ। রাস্তায় বিস্ফোরিত গ্যাস সিলিন্ডার ফেলার কারণে তাদেরকে অনেকেই দগ্ধ হয়েছেন।
কোনাবাড়ী মর্ডাণ ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার মো. আশরাফ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে কাউকে পাইনি। দগ্ধদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথমে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনে সূত্রপাত হয়। এঘটনায় তথ্য সংগ্রহ করছি পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।
কোনাবাড়ী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ইফতারের আগে তিনজন দগ্ধ রোগী এসেছিল তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কোনাবাড়ী পপুলার হসপিটালের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. জাহিদ জানান, সিলিন্ডারের আগুনে দগ্ধ ১০জনের অধিক রোগী এসেছিলেন। তাদের সবার শরীরের ৭০% পুড়ে গেছে। পরে তাদের গেট থেকেই অ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ্ আল আরেফিন জানান, সংবাদ পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের টিম যায়। সেখানে গিয়ে দ্বগ্ধ কাউকে পাওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিস যাওয়ার আগেই দ্বগ্ধদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা দ্বগ্ধদের সংখ্যা সংগ্রহ করছি।