রমজান আলী রুবেল, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি.গাজীপুরের শ্রীপুরে বেতন বাড়ানো ও নতুন বেতনকাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকেরা। এ সময় মহাসড়কের দুপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। আটকা পড়ে বিভিন্ন কারখানা অফিসে কর্মরত হাজার হাজার মানুষ। ঘণ্টা দুয়েক পর পুলিশ শ্রমিকদের সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে শ্রমিকেরা এখনো কারাখানার সামনে অবস্থান করছেন।
এদিকে এ সময় পুলিশকে লাঠিপেটা করতে ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। পাল্টা শ্রমিকেরাও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন।
(শনিবার ৯ মার্চ) সকাল ৬টা থেকে উপজেলার জৈনাবাজার এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে এই বিক্ষোভ করেন এএ ইয়াং মিলস্ লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা।
এতে ঢাকা মহাসড়কের দুপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। শ্রমিকেরা দাবি করেন, পুলিশের লাঠিপেটায় কয়েকজন শ্রমিকের পাশাপাশি পথচারীরা আহত হয়েছেন। তবে মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন, মাওনা হাইওয়ে পুলিশ জনসাধারণের উপর লাঠিপেটা করেনি। মহাসড়কে শ্রমিক আন্দোলনের সময় মাওনা হাইওয়ে পুলিশ, শ্রীপুর থানা পুলিশ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে ছিল শ্রমিকদের উপর কারা হামলা করেছে এবিষয়ে আমার জানা নেই।
এএ ইয়াং মিলস্ লিমিটেড কারখানার আন্দোলনরত শ্রমিকেরা অভিযোগ করে বলেন, আশপাশের সব কারখানায় বেতন বাড়িয়েছে। এখানকার বেতন আগের মতোই রয়ে গেছে। বেতন কম দেওয়া হয়, তাও সময়মতো দেওয়া হয় না। প্রতি মাসের ১২ তারিখের আগে বেতন দেওয়া হয় না। বিষয়টি সমাধানের জন্য এএ ইয়াং মিলস্ লিমিটেড কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার জন্য শ্রমিকেরা গেলেও তাঁরা গুরুত্ব দেননি।
এএ ইয়াং মিলস্ লিমিটেড কারখানার শ্রমিক ইমন হোসেন বলেন, ‘আমার বোন কাজ করে পাশের একটি গার্মেন্টসে, তার বেতন আমার দ্বিগুণ। অথচ সমান পরিশ্রম করি, আমাদের বেতন অর্ধেকের কম। এ জন্য অনেক শ্রমিক স্পিনিং মিলস ছেড়ে গার্মেন্টসে চাকরি নিতে চেষ্টা করছেন। আমাদের শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু বেতন বাড়ানোর কোনো পরিবেশ দেখছি না। তাই রাস্তায় এসেছি। কিন্তু পুলিশ আমাদের রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেডের মাধ্যমে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের অনেক শ্রমিককে পিটিয়ে আহত করেছে পুলিশ শুধু তাই নয় কারখানার নতুন কর্মকর্তারা বহিরাগত লোক নিয়ে আমাদেরকে মারধর করেছেন।
এএ ইয়াং মিলস্ লিমিটেড কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মোহাম্মদ সুলতান উদ্দিন বলেন, ‘বেতন বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তবু শ্রমিকেরা মানছে না। আমরা চেষ্টা করছি বুঝিয়ে তাদের অপেক্ষা করাতে। কিন্তু বোঝানো যাচ্ছে না। এতগুলো শ্রমিক রাস্তায় নামলে আমরা কী করতে পারি।
মাওনা হাইওয়ে থানার ওসি মোহাম্মদ মাহবুব মোর্শেদ বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকাকে বলেন, ‘সকাল ৬টা ১০ থেকে সকাল ৭ঃ৩০ পর্যন্ত ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন এএ ইয়াং মিলস্ লিমিটেড নামক কারখানার শ্রমিকেরা। তাতে করে সড়কের দুপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়ে অসংখ্য অফিসগামী মানুষ। পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।