মাসুদ রানা সরকার, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি ঃ বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার ঐতিহাসিক মা ভবানীর মন্দিরে গত শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি/২৪, মাঘী পূর্ণিমা উৎসব উদযাপিত হয়েছে।দিনটিকে ঘিরে উপমহাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ৫১টি পীঠস্থানের অন্যতম এই মন্দির প্রাঙণে হাজার হাজার পূণ্যার্থীর সমাগম ঘটে। সেইসঙ্গে অতীত জীবনের পাপ মোচনসহ পূন্যলাভের আশায় মা ভবানীর মন্দির সংলগ্ন শাঁখারী পুকুরে স্নান উৎসবে মেতে উঠেন তাঁরা।প্রতি বছর মাঘ মাসে পূর্ণিমার চাঁদের মাঘী পূর্ণিমার পঞ্জিকা তিথি অনুযায়ী এ পূন্যস্থানে মাঘী পূর্ণিমা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় এবারো উৎসবটির আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে শুক্রবার বিকেল থেকেই মন্দিরস্থলে পুর্ণার্থীরা আসতে থাকেন।ধর্মীয় শাস্ত্র্যমতে, মাঘী পূর্ণিমার দিনে এ স্থানে অংশ নিলে তার অতীত জীবনের পাপ মোচনসহ পূন্যলাভ হয়। আর সেই আশায় দেশ বিদেশের হাজার হাজার ভক্ত নর-নারী ও শিশু কিশোর মন্দিরের শাঁখা পুকুরে স্নান করেন। সেই সঙ্গে ঐতিহাসিক এই মন্দিরে রক্ষিত প্রতিমা দর্শন, পূজাঅর্চনা, ভোগদান, অর্ঘদান, মাতৃদর্শন করেন ভক্তরা।এদিকে মাঘী পূর্ণিমা উৎসব উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবারো মা ভবানী মন্দিরের চারপাশে মেলা বসেছে। মেলায় মিষ্টান্ন সামগ্রীসহ পাওয়া যায় রকমারি খাবার। সেই সাথে শিশুদের বিভিন্ন খেলনা, ইতিহাস ঐতিহ্যখ্যাত বই পুস্তকও মেলায় বিক্রি করতে দেখা যায়।সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলা থেকে আসা জুঁথি রানী ঘোষ বলেন, এখানে আসলে দেহ মন পবিত্র হয়। তাই মায়ের মন্দিরে এসেছি। মায়ের দর্শন নিয়েছে। বিশেষ করে মনের আশা বাসনা পুরণের জন্য শাঁখারি পুকুরে স্নান শেষে মায়ের কাছে আর্শিবাদ করেছি। মায়ের আর্শিবাদ নিতে আবারও আসবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।মন্দির পরিচালনা কমিটির নেতা নিমাই ঘোষ জানান, যুগ যুগ আগে থেকেই এই ধর্মীয় তিথি উৎসব পালন হয়ে আসছে। বিগত তিন বছর বৈশি^ক মহামারী করোনার এই উৎসবে লোক সমাগম কম হলেও সেই প্রভাব কেটে যাওয়ায় এবছর প্রায় লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটেছে। প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ ও উৎবমুখর পরিবেশে ধর্মীয় এই অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছে। এছাড়া ধর্মীয় বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান পালন করার সুবিধার্থে প্রশাসনের পাশাপাশি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক দলগঠন করা হয়েছে। যাতে করে পূর্ণার্থীরা সুশৃঙ্খলভাবে পূজা অর্চনা করতে পারেন। সেইসঙ্গে দূর-দূরান্তের পূণ্যার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মন্দিরের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক প্রসাদ বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান মন্দির কমিটির ওই নেতা।উল্লেখ্য: এই মাতৃমন্দির মহাশক্তির ৫১টি পীঠস্থানের অন্যতম। কালিকাপুরান অনুসারে দক্ষযজ্ঞে দেবী সতীর স্বামীনিন্দা সহ্য করতে না পেরে দেহত্যাগ করেন। সতীর প্রাণহীন দেহ স্কন্ধে নিয়ে দেবাদিদেব মহাদেব প্রলয় নৃত্য শুরু করেন। সেই মহাপ্রলয় নৃত্য থেকে বিশ্ব ব্রক্ষান্ড রক্ষা কল্পে স্বয়ম্ভু বিষ্ণু সুদর্শণ চক্র দ্বারা সতীর প্রানহীণ দেহ ৫১টি খন্ডে বিভক্ত করেন। সেই সব দেহখন্ড বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় পতিত হলে একান্নাটি পীঠস্থানের উদ্ভব হয়। ভবানীপুরে দেবীর বামতল্প বা বামপাজরাস্থি মতান্তরে দক্ষিন চক্ষু পতিত হয়েছিল। এই পীঠস্থানে দেবীর নাম অর্পনা (ভবানী) এবং বামন