টঙ্গী( গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি চাপায় পোশাক শ্রমিক নিহতের জেরে বন্ধ হওয়া ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চালু হয়েছে। সকাল পৌনে আটটা থেকে বেলা সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত মহাসড়ক বন্ধ থাকে। সাড়ে ১২ টায় যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন বলেন, বেলা সাড়ে ১২ টায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। আন্দোলনরত শ্রমিকদের তাদের সহকর্মী নিহতের ঘটনার বিচারের আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে।
পুলিশ জানায়, কুনিয়া বড়বাড়ি এলাকায় বেশ কিছু কারখানা ভাংচুর হয়। টঙ্গী এলাকায় ১১ টি কারখানা ভাংচুর হয়েছে। সব মিলিশে প্রায় অর্ধ শতাধিক কারখানা ভাংচুর হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাড়ি চাপায় মনিরা (৩০) নামে এক নারী শ্রমিকের (৩০) মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। উত্তেজিত শ্রমিকেরা ঘাতক গাড়িতে আগুন দিয়ে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন দেয় । শ্রমিকরা কুনিয়া, বড়বাড়ি ও টঙ্গীর সাতাইশ এলাকায় বেশ কয়েকটি কারখানা ভাংচুর করে। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ টঙ্গী থেকে চন্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত মহাসড়কের ১২ কি:মি: বন্ধ হয়ে যায়।
বেলা ১২ টায় চারিদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শত শত শ্রমিক মহাসড়কে অবস্থান নেয়। তারা মিছিল সহকারে বিভিন্ন কারখানায় গিয়ে শ্রমিকদের রাস্তায় নামার জন্য আহবান করে। শ্রমিকেরা নামতে না চাইলে কারখানা ভাংচুর করে। মহাসড়কে তান্ডবের কারণে গণপরিবহন মহাসড়ক ছেড়ে অলিগলিতে অবস্থান নেয়। মহাসড়ক শ্রমিকদের রণক্ষেত্র হওয়ায় গাজীপুর থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক বন্ধ হয়।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) সকাল পৌনে ৮ টার সময় ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাছা থানাধীন মেরিনা সিএনজি ফিলিং স্টেশন সামনে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি চাপায় নারী শ্রমিক মনিরা মারা যায়। ঘাতক গাড়ি আটকাতে গিয়ে গাড়ির ধাক্কায় এক ভ্যানচালক গুরুতর আহত হয়।
নিহত শ্রমিক শরিয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ থানার চরভাঙ্গা গ্রামের রুহুল আমিন এর স্ত্রী। সে বড়বাড়ী এলাকায় স্বামীর সাথে ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকুরী করতো।
স্থানীয়রা জানান,আজ সকাল পৌনে ৮ টার সময় তারগাছ এলাকায় এক নারী শ্রমিক রাস্তা পারাপারের সময় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন কন্টিনার ওই নারী শ্রমিককে চাপা দিলে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে বাঁশ বোঝাই একটি ভ্যান গাড়িটি থামানোর চেষ্টা করলে অজ্ঞাতনামা ওই ভ্যানচালককেও চাপা দেয় ঘাতক গাড়ি। ফলে ভ্যানচালকও গুরুত্ব আহত হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন ভ্যানচালককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপরই উত্তেজিত বিভিন্ন গার্মেন্টস কর্মী স্থানীয় লোকজন ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের উভয় পাশে ব্যারিকেট দিয়ে প্রায় ৪০ টি যানবাহনের গ্লাস ভাঙচুর করে এবং রাস্তার পাশে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরাতে ও আক্রমণ চালায়। এতে গাজীপুর থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ১২ কি: মি: মহাসড়ক পাঁচ ঘন্টা বন্ধ থাকে।