টঙ্গী : আমার ভালোবাসা আছে। জীবনটাই আমার ভালোবাসা। তাই ভালোবাসা লাগবে না। আমার সাজুগুজু করার ক্ষমতা নেই তবে সাজুগুজু করা মানুষ দেখলে আমার ভালো লাগে। আমি যেমন আছি ভালো আছি, আমার ভালোবাসার অভাব নেই। আমি খুশি।
আজ ১ লা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে এমন কথাই বলেছেন টঙ্গীর হাজী নগর বস্তির বাসিন্দা ঝর্ণা বেগম(৪০)। বয়স কম হলেও হাড়ভাঙা খাটুনিতে বুড়ি হয়ে যাওয়া ঊদুই সন্তানের জননী।
ঝর্ণা বেগম স্বামী সাজাত আলী কাজ হারিয়ে গ্রামের বাড়ি নরসিংদী সদরের নবীপুরে থাকেন দুই সন্তান নিয়ে। ঢাকার উত্তরায় একটি প্রতিষ্ঠানে ৬৩৮০ টাকা মাসিক বেতনে ঝাড়ুদারের কাজ করেন ঝর্ণা। এই টাকা দিয়ে দ্রব্যমূল্যের উর্ব্ব গতির বাজারে চলা কষ্ট তাই দুই সন্তান সহ তার স্বামী গ্রামের বাড়িতে থাকেন আর টঙ্গীতে তিনি একা থাকেন।
ঝর্ণা বেগম বলেন, রাত তিনটা থেকে দিনের ১২ টা পর্যন্ত আমার ডিউটি। প্রতিদিন হেঁটে হঁটে টঙ্গী থেকে উত্তরায় যাতায়াত করি। বিকাল বেলায় ঘুমাই। আমি গরীব মানুষ। স্বামী সন্তান গ্রামের বাড়ি্তে থাকে। তাই আমি একা। মাটির চুলায় লাকড়ী আর পরিত্যক্ত কাগজ কুড়িয়ে রান্না করি। একবার রান্না করে কয়েক বেলায় খাই। রাতে ঝাড়ুদারের কাজ করি আর দিনে ঘুমাই। তাই আমার হাতে সময় নেই। ভালোবাসা ও ফাগুন কখন আসে কখন যায় জানিনা। আমার ভালোবাসা লাগবে না, আমার ভালোবাসা আছে।
ঝর্ণা বেগম হাসিতে হাসিতে ভেঙে পড়ে বলেন, আমাকে ফুল দেয়ার কেউ আছে! আর রঙের শাড়ি জীবনেও দেখি নাই। তবে মানুষকে সাজুগুজু দেখলে আমার ভালো লাগে। আমার আনন্দ লাগে। আমি কষ্ট করে চলি তবুও আমি সুখি। আমার ভালোবাসা আছে, জীবনটাই আমার ভালোবাসা, আমার কোন ভালোবাসা লাগবে না।