নোয়াখালীর সুবর্ণচরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের রাতে এক গৃহবধূকে (৪০) সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলার রায় ঘোষণা করেছে আদালত। রায়ে ১০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং একই সাথে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া আরো ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে, অনাদায়ে আরো দুই বছরের কারাদণ্ড।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন সুবর্ণচরের মধ্যম বাগ্যা গ্রামের মো: সোহেল (৩৮), মো: হানিফ (৩০), স্বপন (৪২), মো: চৌধুরী (২৫), ইব্রাহীম খলিল বেচু (২৫), মো: বাদশা আলম বসু (৪০), আবুল হোসেন আবু (৪০), মোশারফ (৩৫), মো: সালাউদ্দিন (৩২), মো: জসিম উদ্দিন (৩২), মো: হাসান আলী বুলু (৪৫), মো: মুরাদ (২৮), মো: জামাল ওরফে হেঞ্জু মাঝি (২৮) ও মো: সোহেল (২৮)। আসামি মো: মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮) ঘটনার পর থেকে পলাতক।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে (৪০) মারধর ও গণধর্ষণ করা হয়। নির্যাতনের শিকার নারী চার সন্তানের জননী। নির্যাতিত নারীর অভিযোগ, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেয়ার জের ধরে ওই হামলা ও ধর্ষণ করা হয়। ওই ঘটনার পরদিন (৩১ ডিসেম্বর) নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী চর জব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কার হওয়া প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বিগত ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ছালেহ আহম্মদ সোহেল খান বলেন, ‘এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ জন সাক্ষী উপস্থাপন করে। আসামিপক্ষের পাঁচজন সাফাই সাক্ষী প্রদান করে। তবে কোনো সাক্ষীই ভোটকেন্দ্রে পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেয়ায় জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেনি।’