টঙ্গীতে নির্বাচন উত্তর সহিংসতার আশংকা

Slider গ্রাম বাংলা
Exif_JPEG_420

টঙ্গী( গাজীপুর) প্রতিনিধি: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামীলীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে । দেশীয় অস্ত্রের মহড়া, অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার( ২৫ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় টঙ্গীর চেরাগ আলী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক দিন ধরে নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা ঈগল প্রতীকের কর্মী জনৈক আলামিনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিমাচল পরিবহনের কাউন্টারে মহড়া দিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ আবার মহড়া দিতে আসলে উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসনে।

জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-২ ( সদর টঙ্গী) আসনে মোট আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে তিনজন প্রার্থী আওয়ামীলীগের। নৌকা ট্রাক ও ঈগল প্রতীকের এমপি প্রার্থীর মধ্যে নৌকা প্রতীক বিজয়ী হয়। এই সংসদীয় আসনের টঙ্গী এলাকায় নৌকা ও ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর বাড়ি। দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার কারণে নৌকা ও ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা বিভিন্ন ব্যবসা বানিজ্য করে আসছিল। নির্বাচনে নৌকা প্রতীক বিজয়ী হওয়ায় নৌকা ও ঈগল সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। শিল্পনগরী টঙ্গীর প্রায় অর্ধ সহস্র শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজীপুর মহানগর যুবলীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল ইসলামের কর্মী সমর্থকরা গুটি কয়েক শিল্প প্রতিষ্ঠানে ব্যবসা বানিজ্য করত। নির্বাচনের পর নৌকার সমর্থকরা ঈগল প্রতীকের সমর্থকদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। নির্বাচনের পর থেকে থেমে থেমে চলে এই চাপা উত্তেজনা। এখন এই মাত্রা সহিংসতায় রুপ নেয়ার আশংকায় এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সম্প্রতি আওয়ামীলীগ ও যুবলীগ কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। বিচ্ছিন্নভাবে হালকা ঘটনাও ঘটে। ১০ জানুয়ারী ও ২৩ জানুয়ারী রাত আটটার দিকে টঙ্গীর চেরাগ আলী এলাকায় হিমাচল পরিবহন কাউন্টারে ব্যবসা দখলের জন্য অনুষ্ঠিত হয় দেশীয় অস্ত্রের মহড়া। হুমকি ধামকি ও ব্যবসা ছেড়ে দেয়ার জন্য প্রকাশ্যে হুমকি দেয়ার ঘটনা ঘটে।

হিমাচল পরিবহনের ব্যবসায়ী আল আমিন জানান, তিনি যুবলীগ করেন। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি এই ব্যবসা করে আসছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি তার দলের নেতা সাইফুল ইসলামের ঈগল প্রতীকের নির্বাচনে এজেন্ট ছিলেন। এই জন্য তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের জন্য দফায় দফায় মহড়া আসছে। দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে কতিপয় লোক তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের চেষ্টা করছেন। একই অবস্থা টঙ্গীর বেশ কিছু জায়গায় বলে জানান তিনি। এসকল বিষয়ে তিনি টঙ্গী পশ্চিম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, টঙ্গীতে একাধিক সিটি কাউন্সিল তার লোকজন দিয়ে নৌকা বিরোধীদের ব্যবসা দখলের মিশনে নেমেছেন। তাদের সাথে স্থানীয় একাধিক শীর্ষ ছাত্রলীগ নেতা রয়েছেন। টঙ্গীকে কয়েক অংশে ভাগ করে তারা মিশন পরিচালনা করছেন। যারা নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করেছেন তাদের দখল থেকে সকল ব্যবসা বানিজ্য ছিনিয়ে নিতে এই মিশন বলে জানিয়েছেন একাধিক ভুক্তভোগী।

এদিকে আলামিনের প্রতিপক্ষ রাস্তায় এলোমেলোভাবে গাড়ি রাখার অভিযোগ এনে থানায় পাল্টা অভিযোগ দেয়। দুই পক্ষের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ মিমাংসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আলামিন ঈগল প্রতীকের পক্ষে ছিল। তাই একটু সমস্যা হচ্ছে। আমি বিষয়টি দেখছি, কোন সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *