শুরুতেই ‘বৈকল্যে’র জটিলতায় ট্রেনের সিসি ক্যামেরা

Slider সারাদেশ


যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্রেনের ভেতরে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) বসাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিছু ট্রেনে ইতোমধ্যে বসানো হয়েছে। তবে সেগুলো ঠিকঠাক কাজ করছে না। কোনো কোনোটি বিকল হয়ে আছে। ক্যামেরা চালু থাকলেও ভিডিও পাওয়া যাচ্ছে না। অপারেটিংয়ে দেখা দিয়েছে নানা জটিলতা। ফলে ক্যামেরা স্থাপনের সুফল কতটুকু পাওয়া যাবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রেললাইন কেটে ফেলা, ট্রেনে আগুন দেওয়াসহ নানা ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় নারী-শিশুসহ অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ট্রেনযাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কমে যায় রেলপথে যাত্রীর সংখ্যা। এ অবস্থায় ট্রেনের যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রেল লাইনে পাহারা বসানো এবং ট্রেনে আগুন লাগানো দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করতে ট্রেনের ভেতরে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। পাঁচটি ট্রেনে এরই মধ্যে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব আন্তঃনগর ট্রেনে লাগানো হবে এই ক্যামেরা।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে কিছু ট্রেনে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। এটি পাইলটিং-এর মতো করে চলছে। পুরো কার্যক্রম দেখভাল শেষে যে ব্যবস্থা কার্যকর হবে সেটি স্থায়ীভাবে করার চিন্তাভাবনা রয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা ও সিসি ক্যামেরা কীভাবে থাকবে সেটির আন্তর্জাতিক একটি মানদণ্ড আছে। সেই মানদণ্ড অনুসরণ করে ক্যামেরা স্থাপন করা উচিত।

এ ক্যামেরাগুলো থেকে যেন ডাটা নিতে পারে সেজন্য পুলিশ কাজ করছে। মোহনগঞ্জ ট্রেনে আমরা ১০টি কোচে ২০টি সিসি ক্যামেরা বসিয়েছি। কাজ এখনো চলছে, তার জন্য কিছু ক্যামেরা হয়ত অকার্যকর থাকতে পারে, মনিটরে নাও দেখা যেতে পারে। আমরা এমনভাবে করেছি যেন প্রতিটি ডাটা সার্বক্ষণিক রেকর্ড হয়। এই সমস্যা সাময়িক, আমরা দ্রুতই ওভারকাম করতে পারব
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান

বাংলাদেশ রেলওয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র ঢাকা পোস্টকে জানায়, গত ১০ জানুয়ারি থেকে ট্রেনে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের তূর্ণা এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতী ও সুবর্ণ এক্সপ্রেস এবং ঢাকা-নেত্রকোণা রুটের হাওর এক্সপ্রেস ও মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪টি ট্রেনে ক্যামেরা দেখভাল করছে রেলওয়ে পুলিশ এবং একটি ট্রেনের ক্যামেরা দেখভাল করছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। গোটা প্রক্রিয়ার টেকনিক্যাল দিকগুলো দেখছে তৃতীয় পক্ষের প্রতিষ্ঠান সামির এন্টারপ্রাইজ।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান করা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ঘুরে দেখা যায়, ট্রেনের একটি কোচে দুটি করে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। খাবার গাড়ির কোচ এবং দুটি গার্ড ব্রেক ভ্যানেও সিসি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। ক্যামেরাগুলোর বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে কোচের ভেতর থেকে। ভিডিও ডাটা ট্রান্সমিশনের জন্য নেটওয়ার্কিং করা হয়েছে ক্যাট সিক্স ক্যাবলের মাধ্যমে। কোচের শেষ প্রান্তে দুই দিকে বসানো হয়েছে ক্যাট সিক্সের ক্যাবল পোর্টের জয়েন্ট বক্স। এখানে প্লাগইন সিস্টেমের মাধ্যমে ক্যাবলগুলোর সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।

সিসি ক্যামেরার সার্ভার ও স্টোরেজ রাখা হয়েছে ট্রেনের দুই গার্ড ব্রেক ভ্যানে। সেখানে ৪জি মোবাইল সিম সংযোজন করা যায়, এমন ওয়াই-ফাই রাউটার বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে সেন্ট্রাল সিস্টেমে যুক্ত হবে ট্রেনের ভেতরে পাওয়া ভিডিও ফুটেজ। এছাড়া সেখানে ২টি মনিটর বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে ট্রেনের গার্ড চলন্ত অবস্থায় তার রুমে বসেই পুরো ট্রেনের ভেতরের চিত্র দেখতে পারবেন। অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ঘটলে সে বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারবেন। একই সঙ্গে চলন্ত অবস্থায় ট্রেনে পুরো সিস্টেম কাজ করছে কি না, তা দেখার জন্য একজন অপারেটরও নিয়োগ করা হয়েছে। তবে সেই অপারেটরের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এটা আসলে পাইলটিংয়ের সমস্যা নয়। পাইলটিং করার এখানে কিছু নেই। ট্রেনের জন্য ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি প্রটোকলে বলা আছে, কোচের মধ্যে কমপক্ষে দুটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র এবং সিসিটিভি ক্যামেরা থাকতে হবে। কোনো নাশকতার ঘটনা ঘটলে বা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র দিয়ে সেটি নেভানো যাবে। আর সিসিটিভি দিয়ে পরবর্তীতে সেটি এনালাইসিস করে দেখতে পারবে। এই বিষয়টা পাইলটিংয়ের বিষয় নয়, ডিপ্লয়মেন্টের বিষয়। এটা এমনভাবে বসাতে হবে যাতে করে টেকসই হয় এবং কনসিল থাকে

গার্ড ব্রেকে রাখা সার্ভার ও স্টোরেজ রুম ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে মনিটরে মাত্র ছয় থেকে সাতটি সিসি ক্যামেরার লাইভ ভিউ দেখা যাচ্ছে। বাকি ক্যামেরাগুলোর লাইভ ভিউর ঘর খালি রয়েছে।

কেন বাকি ক্যামেরাগুলো চলছে না— জানতে চাইলে অপারেটর টিপু বলেন, কোচ থেকে সংযোগ ক্যাবল ছিঁড়ে গেছে। আমরা টেলিকম বিভাগকে জানিয়েছি, তারা হয়ত ঠিক করবে। ট্রেনে অতিরিক্ত কোনো ক্যাবল নেই।

ট্রেনের স্টুয়ার্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ সেলিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, কোচের মাঝামাঝি কয়েকটি লাইন বিচ্ছিন্ন আছে বলে সব ক্যামেরা সরাসরি দেখা যাচ্ছে না। তিন চারদিন হয়েছে লাগিয়েছে, কিন্তু এর মধ্যেই কাজ করছে না।

ওই ট্রেনের খাবার গাড়ির কর্মী সালমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনেকগুলো লাইন কোচ থেকে ছুটে গেছে। এগুলো খুলে নিচে পড়ে থাকে। এ লাইন খুলে গেলে সিসি ক্যামেরায় ছবি বা ভিডিও দেখা যায় না। লাইনগুলো যদি সব সময় চেক করা হয়, তাহলে কাজে দেবে।

যাত্রীদের কেউ বলছেন ইতিবাচক, কেউ বলছেন ‘নাটক’

ক্যামেরা লাগানোর বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন ট্রেনের যাত্রীরা। আবার ক্যামেরা কাজ না করার বিষয়টি তাদের ভাবিয়ে তুলছে। কেউ কেউ বলছেন এর সবই রেলওয়ের লোক দেখানো নাটক!
নেটওয়ার্কিং কেবল বা তার হাতের নাগালে থাকছে আর লোকে টেনে ছিঁড়ে ফেলতে পারছে- এ রকম পাইলটিংয়ের কোনো যুক্তি আমি দেখি না। সত্যিকার অর্থে যদি আপনি পাইলটিং করতে চান, তাহলে প্রটোকল যেটা আছে সেটা মেনেই করুন। ট্রেনের ঝাঁকুনিতে তার খুলে যাচ্ছে- এই একবিংশ শতাব্দীতে প্রযুক্তির এই উন্নতির যুগে এটি একেবারেই হাস্যকর
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান

ট্রেনের ভেতরে সিসি ক্যামেরা বসানোর বিষয়ে যাত্রী নিশাত তামান্না ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাংলাদেশ যে দিন দিন উন্নতির দিকে যাচ্ছে, ট্রেনে সিসি ক্যামেরা বসানো তার প্রমাণ। আমরা এখন আগের চেয়ে নিরাপদ বোধ করছি। আগে চুরি-ছিনতাই হতো, সেগুলো হয়ত এখন আর হবে না। অপরাধীরা এখন ভয়ে থাকবে।

আরেক যাত্রী মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগে যে অপ্রীতিকর ঘটনাগুলো ঘটত, সিসি ক্যামেরা দেওয়াতে সেগুলো এখন কমে যাবে। ট্রেনগুলোতে যদি আগে সিসি ক্যামেরা সচল থাকত, তাহলে আগুন লাগার মতো ঘটনা ঘটত না। ক্যামেরা লাগানোর পর থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে হচ্ছে।

যদি জানতে পারেন এই সিসি ক্যামেরা কাজ করে না তখন কী করবেন— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই এটির প্রতিবাদ করব।

ট্রেনের ৩৬টি সিসি ক্যামেরার মধ্যে ছয় থেকে সাতটি ক্যামেরার প্রিভিউ দেখা যাচ্ছে, বাকিগুলো দেখ যাচ্ছে না- এটি জানার পর ট্রেনের যাত্রী রাজু আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সিসি ক্যামেরা কাজ করছে না এতে কার লাভ হয়েছে কার ক্ষতি হয়েছে আপনি বলেন? এগুলো কেবল নামেই লাগানো হয়েছে। কাজের কিছু না। আগে যেভাবে ভয় নিয়ে ভ্রমণ করেছি এখনো সেভাবেই যেতে হচ্ছে। এগুলো সব রেলওয়ের নাটক।

দ্রুত ওভারকাম করব : মহাপরিচালক

ট্রেনে নিরাপত্তা ও সিসি ক্যামেরার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ক্যামেরাগুলো থেকে যেন ডাটা নিতে পারে সেজন্য পুলিশ কাজ করছে। মোহনগঞ্জ ট্রেনে আমরা ১০টি কোচে ২০টি সিসি ক্যামেরা বসিয়েছি। কাজ এখনো চলছে, তার জন্য কিছু ক্যামেরা হয়ত অকার্যকর থাকতে পারে, মনিটরে নাও দেখা যেতে পারে। আমরা এমনভাবে করেছি যেন প্রতিটি ডাটা সার্বক্ষণিক রেকর্ড হয়। এই সমস্যা সাময়িক, আমরা দ্রুতই ওভারকাম করতে পারব।

সিসি ক্যামেরার নেটওয়ার্কিং ক্যাবল মানুষের এতটাই হাতের কাছে যে কেউ চাইলে ক্লিপ খুলে ফেলতে পারে- এই বিষয়ে জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, আমি সেই প্লাগইনের বিষয়টি দেখেছি। আমরা নিরাপত্তা দিচ্ছি যাত্রীদের। এটা রক্ষা করা সবার দায়িত্ব। কেউ যদি ক্যাবল টান দিয়ে ছিঁড়ে ফেলে বা কেটে ফেলে, সেটি হয়ত ডিটেক্ট হবে। যাত্রী সাধারণের প্রতি আমাদের আহ্বান, ক্যামেরাগুলো স্থাপন করা হয়েছে তাদের নিরাপত্তার জন্য। দেখভালের দায়িত্ব তাদেরও আছে। এটার ফিক্সড কোনো সিস্টেম করা যাবে না, কারণ মাঝে মাঝে কোচগুলো পরিবর্তন করতে হয়।
ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি প্রটোকল না মেনে কাজ করায় এ বিপত্তি দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা/ ছবি : ঢাকা পোস্ট

তিনি আরও বলেন, এটা একটা পাইলটিং প্রকল্প। ভালো-মন্দ দেখে সর্বোত্তম প্রক্রিয়া বা ব্যবস্থাটা আমরা কাজে লাগাব। যে সিস্টেম সবচেয়ে বেশি কার্যকর হবে, সেটার দিকেই আমরা এগিয়ে যাব। রেলওয়ে পুলিশ একটা টেকনোলজি ব্যবহার করার চেষ্টা করছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে আরেকটা টেকনোলজি ব্যবহার করছে। তারপরে আমরা একসঙ্গে বসব এবং যে টেকনোলজিটা সবচেয়ে ভালো হবে সেটি কার্যকর করব।

মানদণ্ড অনুসরণ জরুরি : যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটা আসলে পাইলটিংয়ের সমস্যা নয়। পাইলটিং করার এখানে কিছু নেই। ট্রেনের জন্য ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি প্রটোকলে বলা আছে, কোচের মধ্যে কমপক্ষে দুটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র এবং সিসিটিভি ক্যামেরা থাকতে হবে। কোনো নাশকতার ঘটনা ঘটলে বা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র দিয়ে সেটি নেভানো যাবে। আর সিসিটিভি দিয়ে পরবর্তীতে সেটি এনালাইসিস করে দেখতে পারবে। এই বিষয়টা পাইলটিংয়ের বিষয় নয়, ডিপ্লয়মেন্টের বিষয়। এটা এমনভাবে বসাতে হবে যাতে করে টেকসই হয় এবং কনসিল থাকে।
আমি সেই প্লাগইনের বিষয়টি দেখেছি। আমরা নিরাপত্তা দিচ্ছি যাত্রীদের। এটা রক্ষা করা সবার দায়িত্ব। কেউ যদি ক্যাবল টান দিয়ে ছিঁড়ে ফেলে বা কেটে ফেলে, সেটি হয়ত ডিটেক্ট হবে। যাত্রী সাধারণের প্রতি আমাদের আহ্বান, ক্যামেরাগুলো স্থাপন রা হয়েছে তাদের নিরাপত্তার জন্য। দেখভালের দায়িত্ব তাদেরও আছে। এটার ফিক্সড কোনো সিস্টেম করা যাবে না, কারণ মাঝে মাঝে কোচগুলো পরিবর্তন করতে হয়
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান

তিনি আরও বলেন, নেটওয়ার্কিং কেবল বা তার হাতের নাগালে থাকছে আর লোকে টেনে ছিঁড়ে ফেলতে পারছে- এ রকম পাইলটিংয়ের কোনো যুক্তি আমি দেখি না। সত্যিকার অর্থে যদি আপনি পাইলটিং করতে চান, তাহলে প্রটোকল যেটা আছে সেটা মেনেই করুন। ট্রেনের ঝাঁকুনিতে তার খুলে যাচ্ছে- এই একবিংশ শতাব্দীতে প্রযুক্তির এই উন্নতির যুগে এটি একেবারেই হাস্যকর।

ট্রেনে আগুন সন্ত্রাসের সাম্প্রতিক যত ঘটনা

গত বছরের ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় নারী-শিশুসহ অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

গত বছরের ১৬ নভেম্বর টাঙ্গাইল স্টেশনে ‘টাঙ্গাইল কমিউটার’ ট্রেনে দুষ্কৃতিকারীদের আগুনে ২টি কোচ পুড়ে যায়। ১৯ নভেম্বর জামালপুরের সরিষাবাড়ী স্টেশনে ‘যমুনা এক্সপ্রেস’ ট্রেনে আগুনের ঘটনায় দুটি কোচ পুরোপুরি এবং একটি কোচ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২২ নভেম্বর সিলেটে ‘উপবন এক্সপ্রেস’ ট্রেনে আগুনে একটি কোচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৩ ডিসেম্বর রাজেন্দ্রপুর এলাকায় ঘটে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। সেখানে রেললাইন কেটে ফেলায় ‘মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস’ ট্রেনের লোকোমোটিভ ও ৬টি কোচ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ঘটনায় একজন নিহত হন এবং ১০-১২ জন আহত হন। ১৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে দুষ্কৃতিকারীদের দেওয়া আগুনে ‘মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস’ দ্বিতীয়বার আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এই ঘটনায় ট্রেনের তিনটি কোচ আগুনে পুড়ে যায়, নিহত হন চারজন।

সর্বশেষ নির্বাচনের ২ দিন আগে গত ৫ জানুয়ারি রাতে দুবৃর্ত্তদের দেওয়া আগুনে ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ ট্রেনের ২টি কোচ ও পাওয়ার কারের আংশিক পুড়ে যায়। এ ঘটনায়ও চারজন নিহত হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *