মাসুদ রানা সরকার, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি ঃ- সারাদেশের ন্যায় বগুড়াতেও বই উৎসব পালিত হয়েছে। বছরের প্রথম দিনেই হাতে নতুন বই পেয়েজেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে ৯ লাখ শিক্ষার্থী মেতে উঠে উল্লাসে, খুশি অভিভাবকরাও।সোমবার সকালে বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর। এসময় তিনি বলেন, শিক্ষাকে মানসম্মত করতে ২০১০ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিবছর পহেলা জানুয়ারি ‘বই উৎসব’ করে আসছে। ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত সারাদেশে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে ৪৬৪ কোটি ৭৮ লাখ ২৯ হাজার ৮৮৩ কপি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ২০১৭ সাল থেকে সরকার সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর শিশুদের মাতৃভাষায় অধ্যায়নের জন্য চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো এবং সাদরি ভাষাতে বই বিতরণের পাশাপাশি অন্ধ শিক্ষার্থীদের মধ্যেও বই বিতরণ করছে যা আগে কখনো কেউ স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি। বিনামূল্যে বছরের প্রথম দিন বই বিতরণ এটি সত্যি বর্তমান সরকারের প্রশসংনীয় ও চ্যালেঞ্জিং সিদ্ধান্ত যা সারাবিশ্বে রোলমডেল।বগুড়া জেলা প্রসাশক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে বই উৎসবে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিয়াম ফাউন্ডেশনের আঞ্চলিক কেন্দ্রের পরিচালক আব্দুর রফিক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আফছানা ইয়াসমিন, জেলা শিক্ষা অফিসার হযরত আলী ও বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান।নতুন বই পেয়ে কেমন লাগছে অনুভূতি জানতে চাইলে ২য় শ্রেনীর শিক্ষার্থী তাসফি জানান, নতুন শ্রেণীতে উঠে অপেক্ষায় ছিলাম কবে নতুন বই পাবো, আজ হাতে পেয়ে খুব খুশি সে। বাসায় ফিরেই ক্যালেন্ডার দিয়ে বইয়ের মলাট করবে বলেও জানান ছোট্ট এই শিক্ষার্থী।আর বই উৎসবে আসা অভিভাবকরা স্বস্তির নি:শ্বাসের সাথে জানান, একটা সময় ছিলো যখন বছরের শুরুতেই সন্তানদের বই কিনতে প্রায় একরকম সারামাসের অর্ধেক উপার্জন চলে যেতো। শুধু তাই না বই কেনার টাকা যোগাড় হতো না বলে অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষাজীবনের মাঝপথেই ঝড়ে যেতো। আর এখন বছরের প্রথম দিন এভাবে বিনামূল্যে বই পাবে আমাদের সন্তানরা যা সত্যি স্বপ্নের মতো লাগছে। অভিভাবকরা প্রত্যেকেই বর্তমান সরকারের এই উদ্যোগের জন্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, বগুড়ায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৯৯৭ জন শিক্ষার্থী নতুন বই পেয়েছে। জেলার ১২ উপজেলার প্রাথমিক স্তরে ২ হাজার ৪৯৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪ লাখ ৭৭ হাজার ২৪৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০ লাখ ৭০ হাজার ১৮০ টি বই বিতরণ করা হয়। মাধ্যমিক স্তরে ৭৪৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫ লাখ ৩১ হাজার ২৩ টি বই বিতরণ করা হয়।