গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যার অপরাধে অভিযুক্ত করে ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা দায়ের করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রায় তিন মাস ধরে হামলায় সাড়ে ২১ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যার দায়ে এই মামলা করা হয়।
শুক্রবার আদালতে দাখিল করা আবেদনে গাজায় ইসরাইলের পদক্ষেপগুলোকে ‘চরিত্রগত দিক থেকে গণহত্যামূলক’ হিসেবে অভিহিত করা হয় এই যুক্তিতে যে এসব হামলা ফিলিস্তিনি জাতি, বর্ণ ও জাতিগত গ্রুপের বড় অংশকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত।
আবেদনে বলা হয়, হামলায় গাজায় ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হচ্ছে, তাদের দৈহিক ও মানসিকভাবে মারাত্মক ক্ষতির কারণ ঘটানো হচ্ছে, তাদের দৈহিক ধ্বংস করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
আইসিজেকে বিশ্ব আদালত হিসেবেও অভিহিত করা হয়। জাতিসঙ্ঘের এই বেসামরিক আদালত বিভিন্ন দেশের মধ্যকার বিরোধ নিষ্পত্তি করে থাকে। এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) থেকে আলাদা। আইসিসিতে ব্যক্তির যুদ্ধাপরাধের বিচার করে থাকে।
জাতিসঙ্ঘের সদস্য হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইসরাইল উভয়ে আদালতের রায় মানতে বাধ্য।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা গাজা এবং পশ্চিমতীরের ব্যাপারে ইসরাইলের নীতিতে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা শাসনকারী শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘুদের আরোপিত বর্ণগত বিভাজিত জান্তার সাথে তুলনা করেছেন।
বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরাইলের নীতিকে বর্ণবাদী আচরণ হিসেবে অভিহিত করেছে।
নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সদরদফতর থেকে আল জাজিরার গ্যাব্রিয়েল ইলিজোনডো বলেন, ইসরালিকে জবাবদিহিত করতে বাধ্য করার জন্য এই পদক্ষেপটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তিনি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা এখন বিষয়টিকে আইসিজেতে নিয়ে যাওয়ায় জাতিসঙ্ঘকে এখন এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের ব্যাপারে রায় দিতে হবে।
গত ১৬ নভেম্বর জাতিসঙ্ঘের ৩৬ জন বিশেষজ্ঞ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ‘ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তারা বলেন, ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলের কার্যক্রম ‘গণহত্যার’ মতো।
দক্ষিণ আফ্রিকার এই পদক্ষেপকে ‘ভিত্তিহীন’ হিসেবে অভিহিত করেছে ইসরাইল।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এই মামলা করার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
সূত্র : আল জাজিরা