নিউজিল্যান্ডে ঐতিহাসিক জয় বাংলাদেশের

Slider খেলা


নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আজ ন্যাপিয়ারে তৃতীয় একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে স্বাগতিক দলকে ৯ উইকেটে পরাজিত করেছে টাইগাররা। নিউজিল্যান্ডকে মাত্র ৯৮ রানে গুঁড়িয়ে দেয়ার পর বাংলাদেশ ১৫.১ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৯৯ রান করে জয় তুলে নেয়। নাজমুল হক শান্ত ৫১ রান করে অপরাজিত থাকেন। এই প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাদের মাটিতেই একদিনের ক্রিকেট জয় পেল বাংলাদেশ। আর সেটা পেল একতরফা ম্যাচে। অবশ্য প্রথম দুটি ম্যাচে জয়ের সুবাদে সিরিজটি নিউজিল্যান্ডই জিতেছে ২-১ ব্যবধানে।

তবে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে অবিস্মরণীয় আরেটি রেকর্ড করার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। শান্ত আর এনামুলের সাবলীল ব্যাটিংয়ের একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশ ১০ উইকেটেই জয় পেতে যাচ্ছে। দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ড একবারই হেরেছে ১০ উইকেটের ব্যবধানে। ১৯৮৭ সালে ক্রাইস্টচার্চে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সেই রেকর্ডে ভাগ বসানোর সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছিলেন ওই দুই ওপেনার। কিন্তু ও’রর্কের বলে এনামুল কট বিহাইন্ড হলে তা হাতছাড়া হয়ে যায়। ৩৩ বলে ৩৭ রান করে আউট এনামুল, বাংলাদেশের জয়ের জন্য তখন দরকার ছিল আর মাত্র ১৫ রান।

এর আগে আজ শনিবার ন্যাপিয়ারে শরীফুল, তানজিম আর সৌম্যের দুর্ধর্ষ বোলিংয়ের মুখে ১০০ রানও করতে পারেনি স্বাগতিকেরা। ওই তিনজনই তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন। আর বাকি উইকেটটি নিয়েছেন মোস্তাফিজ। তারা মাত্র ৩১.৪ ওভার টিকেছিল। তারা রান করেছিল ৯৮। এটি ছিল ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে কম রান করার রেকর্ড।
এর আগে টাইগারদের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে কিউইদের সর্বনিম্ন স্কোর ছিল ১৬২। যেটি ২০১৩ সালে মিরপুরের শেরে বাংলায় করেছিল তারা।

ন্যাপিয়ারে সিরিজের শেষ ম্যাচে টসে জয় পান বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত। টসে জিতে তিনি নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠান। এদিন নিউজিল্যান্ড একাদশে কোনো পরিবর্তন না আনলেও; বাংলাদেশ একটি পরিবর্তন আনে। পেসার হাসান মাহমুদের জায়গায় একাদশে আসেন মোস্তাফিজুর রহমান।

প্রথমে বোলিংয়ে নামা টাইগার পেসাররা শুরুতেই নিউজিল্যান্ডকে চেপে ধরেন। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে প্রথম ১০ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে মাত্র ২৭ রান তুলতে সমর্থ হয় তারা। ওই দুটি উইকেটই তুলে নেন তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিব। তিনি ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রকে ৮ রানে সাজঘরে পাঠান। এরপর ওয়ান ডাউনে নামা হেনরি নিকলসকে মাত্র ১ রানে আউট করে দেন তিনি।

তানজিমুল সাকিবের পর ম্যাচের ১৭তম ওভারে নিজের প্রথম উইকেটটি পান অপর পেসার শরিফুল ইসলাম। তিনি টম লাথামকে ২১ রানে আউট করে দেন। এরপর ১৯ তম ওভারে ওপেনার উইল ইয়ংকে ২৫ রানে এবং ২১তম ওভারে মার্ক চ্যাপম্যানকে মাত্র ২ রানে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান।

শুরুতেই দুই উইকেট তুলে নেয়া তানজিমুল সাকিব ম্যাচের ২৩তম ওভারে টম ব্লান্ডেলকে ৪ রানে আউট করে দেন। এতে করে ২৩ ওভার খেলে মাত্র ৭০ রান তুলতেই ছয়টি উইকেট হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড। এরপর ৮৫ রানের মাথায় পার্টটাইম বোলার সৌম্য সরকার জস ক্লার্কসনকে (১৬) আউট করে সপ্তম উইকেটের পতন ঘটান।

দিশেহারা নিউজিল্যান্ডের অষ্টম উইকেটের পতনও ঘটান সৌম। তিনি ২৯তম ওভারে দলীয় ৮৬ রানের মাথায় অ্যাডাম মিলনেকে (৪) সরাসরি বোল্ড আউট করেন। ৩১ তম ওভারে সেই সৌম্যই অদিত্য অশোককে (১০) আউট করে বাংলাদেশকে নবম ব্রেকথ্রু এনে দেন। তখন নিউজিল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে ছিল ৯৭ রান। আর মাত্র এক রান তুলতেই উইলিয়ামকে (১) আউট করে কিউইদের ইনিংস থামিয়ে দেন মোস্তাফিজ।

ম্যাচটিতে নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ২৫ রান করেছেন ওপেনার উইল ইয়ং। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান এসেছে টম লাথামের ব্যাট থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *