গত ২৭ অক্টোবর মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে অপারেশন ১০২৭ শুরু হওয়ার পর তিনটি রাজ্য ও দু’টি অঞ্চলে ৩০০টির বেশি ঘাঁটি ও ২০টি শহর দখল করে নিয়েছে বিদ্রোহীরা। অভিযানের সপ্তম সপ্তাহে মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স, তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এবং আরাকান আর্মি উত্তর শান রাজ্যের প্রায় ৩০০ ঘাঁটি দখল করে নেয়। ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত জান্তা ও তার মিত্রদের কাছ থেকে উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের অন্তত আটটি শহর দখলের পর লইকাউ শহর দখলের প্রস্তুতি নিচ্ছে জোটটি।
আরাকান আর্মি রাখাইন ও চিন রাজ্যে অন্তত ৪৫টি জান্তা ঘাঁটি ও ফাঁড়ি দখল করেছে। উত্তর শান রাজ্য থেকে সামরিক শাসনকে বিতাড়িত করার ক্ষেত্রে বিদ্রোহীদের সাগাইং, মান্দাল, মাগওয়ে ও চিন রাজ্যে সমন্বিত প্রতিরোধগুলো অনুপ্রাণিত করেছে। কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি সমর্থিত পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) সাগাইং অঞ্চলে কমপক্ষে তিনটি শহর দখল করেছে। অন্য দিকে চিন রাজ্যের প্রতিরোধ বাহিনী ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত কমপক্ষে সাতটি শহর দখল করেছে।
১১ নভেম্বর কারেনি ন্যাশনালিটিস ডিফেন্স ফোর্স (কেএনডিএফ), কারেনি আর্মি, কারেনি ন্যাশনাল পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট ও পিডিএফ কর্তৃক কারেনি রাজ্যে অপারেশন ১১১১ নামে আরেকটি সরকারবিরোধী আক্রমণ শুরু হয়েছিল।
কেএনডিএফ জানায়, অপারেশন ১১১১ শুরু হওয়ার পর কারেনি রাজ্যের লইকাউ ও ডেমোসো টাউনশিপ এবং দক্ষিণ শান রাজ্যের পার্শ্ববর্তী পেকন টাউনশিপে ৩৫টির বেশি জান্তা ঘাঁটি প্রতিরোধ বাহিনীর হাতে পড়ে গেছে।
কারেনি ও মোন রাজ্য এবং বাগো অঞ্চলেও সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা শুরু হয়। কারেনি ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি ও মিত্র প্রতিরোধ বাহিনী ৩ ডিসেম্বর বাগো অঞ্চলের মোনে টাউন দখল করেছে। সামরিক জান্তা ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর ব্যাপক গোলযোগ ও সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। ধসে পড়েছে অর্থনীতি। একে একে বিদায় নিচ্ছে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। রিজার্ভ প্রায় নিঃশেষ। গোলযোগপূর্ণ সীমান্তগুলোয় স্থলবাণিজ্য এখন বন্ধ। সরকারি বাহিনীর দমন-পীড়নে ভেঙে পড়েছে মানবাধিকার পরিস্থিতি।
সূত্র : ইরাবতী