মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মর্যাদাসম্পন্ন পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট এলিজাভেথ ম্যাগিল শনিবার পদত্যাগ করেছেন। এছাড়া বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান স্কট এল বকও পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলা এবং এর পর গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রেক্ষাপটে দাতা, রাজনীতিবিদ এবং অ্যালামনাইদের প্রবল চাপে এই পদত্যাগ হলো।
কংগ্রেসে শুনানির চার দিন পর এবং ‘ইহুদিদের গণহত্যার আহ্বান জানানো’ ছাত্রদের শাস্তি প্রদান হবে কিনা- এমন প্রশ্নের মুখে ম্যাগিল সরে দাঁড়ালেন।
একটি ফিলিস্তিনি সাহিত্য সম্মেলনের প্রতি ম্যাগিলের দৃষ্টিভঙ্গি এবং ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ার ফলে ম্যাগিলের প্রতি সমর্থন আগেই হ্রাস পেয়েছিল।
প্রভাবশালী গ্রাজুয়েটরা তার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, ধনী দাতারা তাদের দান প্রত্যাহার করেছেন এবং সরকারি কর্মকর্তারা তাকে অপসারণ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের সভা হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই তিনি জানান, তিনি পদত্যাগ করছেন। বোর্ডের চেয়ারম্যান স্কট এল বক এক ইমেইলে পেন কমিউনিটিকে জানান, ‘মিজ ম্যাগিল স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।’ তিনি গত বছর ওই পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন।
এর দুই ঘণ্টা পর বকও জানান, তিনি পদত্যাগ করেছেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টি বেশ সমস্যায় পড়ে গেছে।
গত শুক্রবার ৭০ জনের বেশি কংগ্রেস ম্যান ম্যাগিলকে বরখাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে কংগ্রেসে শুনানিকালে নিউ ইয়র্কের রিপাবলিকান সদস্য ইলিস স্টেফানিক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি ছাত্ররা ইন্তিফাদার সমর্থনে শ্লোগান দিয়েছে। উল্লেখ্য, এই আরবি শব্দটির অর্থ গণ-অভ্যুত্থান। তবে অনেক ইহুদি ছাত্র একে তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার আহ্বান বলে ব্যাখ্যা করে।
কংগ্রেসওম্যান তার কাছে জানতে চান, ‘ইহুদিদের গণহত্যার আহ্বান কি ভীতিপ্রদর্শন বা হয়রানি নয়?’
এর জবাবে ম্যাগিল বলেন, ‘এমনটা যদি লক্ষ্য করে এবং প্রবল ও সর্বব্যাপী হয়, তবে তা হয়রানিমূলক।’
এই প্রেক্ষাপটে ওই কংগ্রেসওম্যান জানতে চান, ‘এর অর্থ হলো হ্যাঁ।’
ম্যাগিল এর জবাবে বলেন, ‘এটি প্রেক্ষাপট-নির্ভর সিদ্ধান্ত, কংগ্রেসওম্যান।’
এ সময় ওই কংগ্রেসওম্যান চিৎকার করে জানতে চান, ‘এটাই আজকে আপনার সাক্ষ্য? ইহুদিদের গণহত্যার আহ্বান প্রেক্ষাপটের ওপর নির্ভর করে?’
হামাস-ইসরাইল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কলেজের প্রেসিডেন্ট তাদের ক্যাম্পাসে সেমিটিজবিরোধিতা নিয়ে সমালোচনার মুখে রয়েছেন। বিশেষ করে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিন গে এবং এমআইটির প্রেসিডেন্ট স্যালি কর্নব্লুথও চাপের মুখে আছেন। তবে সবচেয়ে বেশি চাপে ছিলেন ম্যাগিল।
সূত্র : সিএনএন, টাইমস অব ইসরাইল এবং অন্যান্য