গরুর মাংসের দামে ‘ধোঁয়াশা’, কোথাও ৬০০ কোথাও ৭০০

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


গত এক মাসের ব্যবধানে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে অনেকটাই কম দামে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। কোথাও কোথাও হাঁক-ডাক করে বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজিতে। আবার কোথাও দাম রাখা হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৭২০ টাকা। একেক বাজারে গরুর মাংসের একেক রকম দাম নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে দেখা দিয়েছে এক ধরনের ধোঁয়াশা। একইসঙ্গে অন্যান্য বাজারে মাংসের দাম কম— এমনটি শুনে স্থানীয় বাজার নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রেতারা।

জনসাধারণের প্রশ্ন, কোথাও যদি একই মাংস ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করে ব্যবসায়ীরা লাভবান হন, তাহলে অন্যান্য স্থানে কেন ৭০০ টাকার বেশি হবে?

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর মধ্য বাড্ডা, মেরুল বাড্ডা ও রামপুরা এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। তবে যেসব এলাকায় গরুর মাংসের দাম কম, সেসব এলাকার দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেশি।

গত পাঁচদিন ধরে রামপুরা বাজারের বেশিরভাগ দোকানে গরুর মাংস ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে মধ্যবাড্ডা ও মেরুল বাড্ডার ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকায় গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৭২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

রামপুরা বাজার থেকে ৬০০ টাকা কেজিতে আধা কেজি গরুর মাংস কিনেছেন ভ্যানচালক মো. আবু বকর। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দাম বাড়ার কারণে গরুর মাংস খাওয়া ভুলেই গিয়েছিলাম। ইচ্ছা থাকলেও এতদিন গরুর মাংস কেনার সাহস হয়নি। তবে দাম কমার কথা শুনে আজ বাজারে এসে ৩০০ টাকা দিয়ে আধা কেজি মাংস কিনলাম।

তবে ৭২০ টাকা কেজিতে মাংস কিনে অনেকটাই আক্ষেপ ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকার বাসিন্দা আকরাম হোসেনের। তিনি বলেন, শুনছি ঢাকার বিভিন্ন স্থানেই না কি গরুর মাংস ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু আমাদের বাজারে কেন ৭২০ টাকার কমে বিক্রি করতে পারছে না, বিষয়টি আমার বুঝে আসে না। যারা ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছে, তারা কি লস দিয়ে বিক্রি করছে?

তিনি বলেন, বাজারে প্রায় প্রতিটি পণ্যের দামই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ হয়। ব্যবসায়ীরা চাইলেই দাম বাড়িয়ে দেন। আবার বিক্রি কমে গেলে দামও কমে যায়। গরুর মাংসের দাম দেখে এটা এখন সবাই বুঝতে পারছে।

দাম প্রসঙ্গে রামপুরা বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, প্রতিটি গরুর দাম তিন থেকে চার হাজার টাকা কমেছে। এতে মাংসের দামও কিছুটা কমেছে। শুধু হাড্ডিসহ মাংস সাড়ে ৭৫০ টাকা কেজি। চর্বি ও হাড়সহ মাংস ৬০০ টাকা কেজি।

মধ্যবাড্ডা এলাকার মাংস বিক্রেতা আলী হোসেন বলেন, ক্রেতাদের ঠকিয়ে কম দামে মাংস বিক্রি করি না। ক্রেতারা ৬০০ টাকায় যেসব মাংস কিনছে, সেগুলোর সঙ্গে চর্বি ও মাথার মাংস থাকছে। ৬০০ টাকা কেজি ধরে ব্যবসায়ীরা বাজার থেকে গরুই কিনে আনতে পারছেন না।

প্রসঙ্গত, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে মাংসের উৎপাদন ছিল ৮৭ লাখ টন। ওই বছর দেশের বাজারে মাংসের চাহিদা ছিল ৭৬ লাখ টন। ফলে চাহিদার তুলনায় ১১ লাখ টন বেশি মাংস উৎপন্ন হয়। উৎপাদন বেশি হওয়া সত্ত্বেও বাজারে দাম বেশি ছিল। কিন্তু মানুষ গরুর মাংস কেনা কমিয়ে দেওয়ায় দামও কমতে শুরু করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *