মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের হাজিনগর কসবা গ্রামে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে প্রেমিক-প্রেমিকা আত্মহত্যা করেছেন। পরকীয়া প্রেমের কারণে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন তারা। সোমবার (৩ আগস্ট) মধ্যরাতে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার ভোরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। প্রেমিক দেলোয়ার হোসেন (২৫) ওই গ্রামের চান মিয়ার ছেলে ও তার প্রেমিকা সুইটি বেগম (২২) একই গ্রামের নজরুল ইসলামের স্ত্রী। কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় সদস্য নাজিমুদ্দিন মিয়া জানান, তিন বছর আগে পাশের আটিগ্রাম ইউনিয়নের করিম দেওয়ানের মেয়ে সুইটি ও হাজিনগর কসবা গ্রামের মৃত নাজিমুদ্দিনের সৌদি আরব প্রবাসী ছেলে নজরুল ইসলামের (৩৫) বিয়ে হয়। বিয়ের পরপরই নজরুল বিদেশে চলে যান। এরপর প্রতিবেশী দেলোয়ারের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন সুইটি। সোমবার রাত ১২টার দিকে সুইটির ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার ও দেলোয়ারের মৃতদেহ ঝুলতে দেখে পরিবারের লোকজন থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ এসে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে। তবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা জানা যায়নি। উল্লেখ্য, নজরুলের প্রথম স্ত্রী দুই মেয়েকে রেখে তার পরকিয়া প্রেমিককে বিয়ে করেছেন। এরপর সুইটিকে বিয়ে করেন তিনি। সুইটিই তার দুই মেয়ের দেখাশুনা করতেন। একই বাড়িতে সুইটির শ্বশুর, শাশুড়ি ছাড়াও দুই ভাসুর পরিবার নিয়ে থাকেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুইটির প্রতিবেশীরা জানান, নজরুলদের বাড়ির দুই রুমের একটি ঘরের একটিতে দুই মেয়ে ও অপরটিতে সুইটি থাকতেন। তার ঘরে দেলোয়ারের যাতায়াত ছিল। সোমবার রাতেও দেলোয়ার তার ঘরে অবস্থান করছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে ওই বাড়িরই কেউ বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে দেন। একপর্যায়ে মান সম্মানের ভয়ে তারা আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। পরে ঘরের ভেতরের দরজা দিয়ে সুইটির সৎ মেয়েরা তাদের আড়ার সঙ্গে ঝুলতে দেখে চিৎকার করলে আত্মহত্যার বিষয়টি বাড়ির ও আশপাশের লোকজনের গোচরে আসে। এদিকে, ঘটনার পর থেকে ওই বাড়িতে সুইটির অসুস্থ শাশুড়ি ছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি। মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমান জানান, এটি হত্যা না আত্মহত্যা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে। এ ঘটনায় সদর থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।