বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হলো শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। আর এ জন্য যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সরকার, বিরোধী দল, নাগরিক সমাজসহ সংশ্লিষ্ট সবার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলবে। এমন অভিমত প্রকাশ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
এখানে সোমবারের প্রেস ব্রিফিংয়ের বক্তব্য তুলে ধরা হলো।
প্রশ্ন : যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শ্রম অধিকার নীতির আলোকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেন সম্প্রতি উল্লেখ করেছেন যে যারা শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘন করবে, হুমকি দেবে কিংবা শ্রমিকদের ভীতি প্রদর্শন করবে, তারা প্রয়োজনে অবরোদের মুখে পড়তে পারে। তিনি শ্রমিক নেতা কল্পনা আখতারের সংগ্রামের কথাও উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে পাঁচ শ্রমিক নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র কি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে?
মিলার : গত সপ্তাহে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন যে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম আইন সুরক্ষা করার জন্য বিশ্বজুড়ে আমরা কিভাবে সরকার, শ্রমিক, শ্রমিক সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন, নাগরিক সমাজ এবং বেসরকারি খাতের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছি। আমরা বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য স্থানেও তা অব্যশই অব্যাহত রাখব।
আমরা বাংলাদেশে ন্যূনতম মজুরি নিয়ে বিক্ষোভে সহিংসতা এবং বৈধ শ্রমিক এবং ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রমকে অপরাধকরণের নিন্দা করছি। আমরা আগেই বলেছি যে আমাদের নীতি হলো, সরকারকে শ্রমিকদের সংগঠন করার অধিকারকে; সহিংসতা, প্রত্যাঘাত কিংবা ভীতি প্রদর্শন ছাড়াই সম্মিলিতভাবে দরকষাকষির অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ এবং বিশ্বজুড়ে আমরা এসব মৌলিক অধিখারকে এগিয়ে নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ নিয়ে আরেকটি প্রশ্ন। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আরেকটি একতরফা নির্বাচন এগিয়ে নিচ্ছে, বিরোধীদের ওপর হত্যা, গণগ্রেফতার, বিরোধী কর্মী ও তাদের পরিবার সদস্যদের অপহরণ করে যাচেছ। যুক্তরাষ্ট্র যে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিল, ক্ষমতাসীন দল আনুষ্ঠানিকভাবে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। আর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। তাহলে আপনারা বাংলাদেশে একদলীয়, স্বৈরতান্ত্রিক শাসন প্রতিরোধে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন?
মিলার : আপনি ঠিকই বলেছেন যে আমরা কোনো বিশেষ দলকে সমর্থন করছি না। আমরা চাই বাংলাদেশের লোকজন যা চায় : অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, যা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। আর আমরা অব্যাহতভাবে একযোগে কাজ করার জন্য সরকার, বিরোধীদল, নাগরিক সমাজ, অন্যদের সাথে অবশ্যই সম্পৃক্ত থাকব যাতে বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা যায়।
প্রশ্ন : সম্মানিত সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের তিনটি রাজনৈতিক দলকে শর্তহীন সংলাপে বসার জন্য চিঠি লিখেছিলেন। নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ জানুয়ারি। ৩০টির বেশি দল ঘোষণা করেছে যে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে। একমাত্র বিরোধী বিএনপি বয়কটের কথা বলেছে। ৩০টির বেশি রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের নির্বাচনকে যুক্তরাষ্ট্র কি প্রতিনিধিত্বমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক মনে করবে নাকি যুক্তরাষ্ট্রের বয়কটের সিদ্ধান্তের কারণে যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনী প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলকতা এবং বৈধতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করবে?
মিলার : আমি আবারো বলছি, আমরা আমরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সম্পৃক্ত থাকব না। তবে আমি আগের মতোই বলব, আমাদের লক্ষ্য সবসময়ই একই রয়েছে : শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা।