টঙ্গী((গাজীপুর) প্রতিনিধি: টঙ্গীতে পাওনা টাকার চাপে বাংলালিংকের সিমবিক্রয় প্রতিনিধি জাহিদ হাসান জনি আত্মহত্যার মামলায় প্ররোচনাকারী হিসেবে বাংলালিংকের তিন বিক্রয় প্রতিনিধি ও বাড়িওয়ালা সহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার( ০৯ নভেম্বর) ভোররাতে এদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বাংলালিংক কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি মোঃ হেমায়েত হোসেন(৩৩), মোহাম্মদ খোরশেদ আলম (৩০), মোঃ বিল্লাল (৩০), বাড়ীওয়ালা লিয়াকত আলী খান ও তার মেয়ের জামাই মোঃ সালাউদ্দিন শুভ। এরা টঙ্গী ও পূবাইল এলাকায় বসবাস করেন।
জানা যায়, নিহত জাহিদ হাসান জনি ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থানার বড়ুয়া গ্রামের কামাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি টঙ্গী পশ্চিম থানার আউচপাড়ার ২৪২ সফিউদ্দিন রোডে জনৈক লিয়াকত আলীর বাসায় ৫ম তলায় ভাড়া থাকতেন। মঙ্গলবার রাতে তিনি ভাড়া বাসায় আত্মহত্যা করেন। এর আগে আসামীরা পাওনা টাকা আদায়ের জন্য বাড়ীওয়ালা মালিক সমিতির লোকজনসহ টাকার জন্য জাহিদ কে বাড়ীওয়ালার একটা কক্ষে আটকে রেখে বাহির থেকে তালাবদ্ধ করে দেয়। রাতে জাহিদ আত্মহত্যা করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আউচপাড়া এলাকায় জাহিদ হাসান জনি(২৪) নামে বাংলালিংক কোম্পানির একজন বিক্রয়কর্মী আত্মহত্যা করেন। বাংলালিংক থেকে দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে থাকা অবস্থায় সন্ধান হয়ে যাওয়ার পর জাহিদকে সারারাত একটি রুমে টাকার জন্য আটকে রাখা হয়। এসময় জাহিদের স্ত্রীকে অন্যত্র আটকে রাখা হয়। ওই সময় জাহিদ একা রুমে আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার( ০৮ নভেম্বর) দুপুরে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আগের রাতে যে কোন সময় তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে জানায় পুলিশ।
সূত্র জানায় , জাহিদ পূবাইল থানা এলাকায় বাংলালিংকে চাকুরী করত। টাকা পয়সার ঝামেলা নিয়ে তিনি পূবাইল এলাকা থেকে স্ত্রী নুসরাত জাহান তৃষাকে নিয়ে পালিয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকায় চলে আসেন। ভিকটিম বাংলালিংকে চাকুরীর সময়ে গত মাসে বাংলালিংক কোম্পানীর দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা কোম্পানীকে না জানিয়ে চুরি করে পালিয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে থাকে। বাংলালিংক প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় কর্মকর্তারা ভিকটিমকে খোজে পেয়ে জাহিদের নিকট থেকে কিছু টাকা উদ্ধার করে এবং বাকী টাকা দেওয়ার জন্য ভিকটিমকে সময় দেয়। পরে ভিকটিম আত্মহত্যা করেন।
স্থানীয় সূত্র আরো জানায়, বুধবার সকাল আনুমানিক ১০টার সময় ভিকটিমের ভাড়াকৃত বাসার রুমে দরজা বন্ধ পাওয়া যায়। তাহার স্ত্রী তৃষা তার স্বামী জাহিদ হাসানকে ডাক দিয়ে কোন সাড়া না পাওয়ায় বাসার মালিককে জানায়। পরে বাসা মালিক ও স্থানীয় লোকজন মিলে বাসার দরজা ভেঙ্গে ভিকটিমকে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দিলে টঙ্গী পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক(এসআই) মোঃ শরীফ সঙ্গীয় ফোর্স সহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ হেফাজতে নেন এবং লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেন।পরে ভিকটিমের লাশ ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।
এ বিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) সাখাওয়াত হোসেন কে বলেন, আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।