গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার পূর্বচন্দ্রা বোর্ড মিল এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভের সময় দুটি পোশাক কারখানায় অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে কারখানা দুটির পার্কিংয়ে রাখা ১৫টি যানবাহন পুড়ে গেছে। পাশাপাশি কারখানার ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কালিয়াকৈর উপজেলার পূর্ব চন্দ্রা বোর্ডমিল এলাকার ফরটিস গার্মেন্টস লিমিটেড ও লিডা টেক্সটাইল পোশাক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কালিয়াকৈর থানার ওসি আকবর আলী খান।
দুই কারখানার শ্রমিকদের বরাত দিয়ে ওসি আকবর আলী খান বলেন, ‘মঙ্গলবার সকাল থেকে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করছিলেন পোশাকশ্রমিকরা। এ সুযোগে দুপুরে কালিয়াকৈরের পূর্ব চন্দ্রা বোর্ড মিল এলাকার ফরটিস গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানায় ঢুকে ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। সেই সঙ্গে কারখানার ভেতরে পার্কিংয়ে রাখা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে তারা। এতে চার-পাঁচটি মোটরসাইকেল, তিনটি প্রাইভেটকার ও একটি মাইক্রোবাস পুড়ে যায়। আধাঘণ্টা পর পাশের লিডা টেক্সটাইল লিমিটেড নামের আরেকটি কারখানায় প্রবেশ করে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে কনটেইনারবাহী দুটি গাড়ি, একটি মিনিবাস ও চারটি প্রাইভেটকার পুড়ে যায়। ওই সময় কারখানার গ্লাস ভাঙচুর করা হয়। পরে শ্রমিকরা ধাওয়া দিলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা ইফতেখার রায়হান বলেন, ‘খবর পেয়ে কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় বেলা আড়াইটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারগুলো একেবারে পুড়ে গেছে। কনটেইনারবাহী দুটি গাড়ি আংশিক পুড়েছে।’
লিডা টেক্সটাইল কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমাদের ধারণা, এটি শ্রমিকদের কাজ নয়। বহিরাগতরা কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে কারখানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে।’
কালিয়াকৈর থানার ওসি আকবর আলী খান বলেন, ‘পোশাকশ্রমিকরা এসব কাজ করতে পারে না। এসব কাজ অন্য কেউ করেছে, যারাই করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এর আগে দুপুরে গাজীপুরের সফিপুর এলাকার জেলা ট্রাফিক পুলিশ বক্সে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন পোশাকশ্রমিকরা। সকালে চন্দ্রা এলাকার অপর একটি ট্রাফিক পুলিশ বক্সে ভাঙচুর করেন তারা। এছাড়া সফিপুর এলাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে হামলা চালান উত্তেজিত শ্রমিকরা। উপজেলার চন্দ্রায় একটি কারখানার সামনে ইলেকট্রনিক পণ্যের শোরুম ও একটি পিকআপেও আগুন দেওয়া হয়। মৌচাক বাজার এলাকায় পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা করা হয়।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, ‘পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে মাঠে রয়েছে পুলিশ। তাদের ভাঙচুর না করে শান্ত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে।’