নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি চাওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখানে অনুমিত চাওয়ার কিছু নেই। তাদের অবহিত করতে হয়, সেটাই করেছি। তারা কী করবে এটা তাদের বিষয়।
আজ মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। কুমিল্লায় হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায় পরিষদের মিছিলে হামলার ঘটনায় বিএনপির তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে দলটি।
প্রেস ব্রিফিংয়ের শুরুতে মির্জা ফখরুল দল, দলের চেয়ারপারসনের ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা এবং ভৈরবে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণহানিতে শোক প্রকাশ করেন।
সেইসাথে সরকারের অব্যবস্থাপনা ও জবাদিহিতা না থাকার কারণে সড়ক দুর্ঘটনায় হাজার প্রাণহানি ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সেই সাথে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের ক্ষতি পূরণের দাবি জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায় পরিষদের মিছিলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছিল। এর ফলে সারাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ খুব উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিল। এ ধরনের ঘটনাকে আমরা নিন্দা করি।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান শাসক গোষ্ঠী আওয়ামী লীগ নিজেরা সমস্যা তৈরি করে এ সমস্যাগুলো নিয়ে তারা বিরোধীদলকে দায়ী করে। এইটা তাদের একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ‘উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে’ সবসময় তারা চালাতে চায়।
কুমিল্লায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মিছিলে হামলার ঘটনায় বিএনপির তদন্ত কমিটির প্রধান দলটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। তিনি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের নির্দেশনায় এই হামলা চালিয়েছে তার আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা। বার বার সন্ত্রাস করে ক্ষমতায় আসা আর থাকা তাদের মজ্জাগত ক্যারেক্টার। সারাদেশে তারা একটা ত্রাসের রাজত্ব করছে। এখন থেকে বিরোধী দল বা ভোটারা যাতে ভোট দিতে না যায় তারা সেই ব্যবস্থা করে ফেলেছে। আর কিভাবে ভোটের বাক্স ভরে রাখা যায় সে ব্যবস্থা তারা করে যাচ্ছে। সামনের সংসদ নির্বাচন তারা সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আবার ক্ষমতায় আসবে এই পরিকল্পনা হাতে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
আনসার বিলকে আতঙ্কের বিষয় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থাকে এই আওয়ামী লীগ কিভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছে? এরা জুডিশিয়ালকে পর্যন্ত ধ্বংস করে দিয়েছে। সারা পৃথিবীতে পুলিশই একমাত্র একটি প্রতিষ্ঠান যাদের গ্রেফতার করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এখন এখানে আনসারকে গ্রেফতার করার ক্ষমতা দেয়া হচ্ছে। যাদের বেসিক কোনো ট্রেনিং নেই। এ বিলে তীব্র নিন্দা জানিয়ে যেন এটি পাশ না করা হয় সে ব্যাপারে দাবি করেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় থাকে তবে প্রত্যেকটি পদক্ষেপই ঝুঁকিপূর্ণ হবে। ওই ঝুঁকি নিয়ে তো এখন আর চিন্তা করে লাভ নেই। মানুষ জেগে উঠেছে। তারা তাদের দাবি আদায়ের বদ্ধপরিকর।
তিনি পরিষ্কারভাবে বলেন, কোন কিছুতেই তারা আটকাতে পারবে না। গ্রেফতার, হয়রানি, নির্যাতন করে কাউকে দমাতে পারবে না। এবারের আন্দোলন একটা চূড়ান্ত পরিণতির দিকে যাচ্ছে, এখানে জনগণের বিজয় অনিবার্য।