আগে যা কখনো হয়নি, তা করার স্বপ্ন নিয়েই দেশ ছেড়েছিলেন সাকিব আল হাসানরা। স্বপ্ন দেখেছেন, দেখিয়েছেন, প্রকাশ্যেই বলেছেন লক্ষ্য এবার ‘সেমিফাইনাল।’ তবে ওই রঙিন স্বপ্ন এখন ধূসর হয়ে গেছে। আর একটা পরাজয় যার সলিল সমাধি করে দিতে পারে। হয়তো হতে পারে তা ভারতের ওয়াংখেড়েতেই।
আজ (মঙ্গলবার) মুম্বাইয়ের নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকা চতুর্থ জয়ের খোঁজে মাঠে নামলেও বাংলাদেশের হাপিত্যেশ দ্বিতীয় জয়ের জন্যে। খেলা হবে ভারতের বিখ্যাত ভেন্যু ওয়াংখেড়েতে। খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায়।
প্রথম ম্যাচে জয়ের পর টানা তিন হার বাংলাদেশকে ফেলে দিয়েছে অস্বস্তিতে। দল দাঁড়িয়ে কঠিন সমীকরণের সামনে। যেখান থেকে উত্তরণের পথ কেবল একটা ভালো জয়। তবে পরবর্তী প্রতিপক্ষ যখন দক্ষিণ আফ্রিকা, তখন দুঃশ্চিন্তাও ছাড়ছে না পিঁছু।
স্বাগতিক ভারতের পর আসরের শক্তিশালী দল বলা যায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে। নেদারল্যান্ডসের সাথে অঘটন বাদ দিলে, যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্যেই পিলে চমকানো পারফর্ম করছেন প্রোটিয়ারা। চার ম্যাচে তাদের গড় রান প্রায় ৩১২। যেখানে পাঁচ শতকের সাথে আছে সমান অর্ধশতকও।
চার ম্যাচের তিনটিতে জয় নিয়ে সেমিফাইনালের দৌড়ে বেশ ভালোভাবেই আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আছে পয়েন্ট টেবিলের তিনে। বিপরীতে আশাজাগানিয়া শুরুর পর ধস নেমেছে বাংলাদেশের। টানা তিন ম্যাচ লজ্জাজনকভাবে হেরে বিপদে সাকিব বাহিনী। হারের চেয়েও বড় মাথা ব্যথার কারণ হারের ধরন।
এখনো কোনো ম্যাচে তিন শ’ পেরোতে পারেনি বাংলাদেশ দল। আসেনি কোনো সেঞ্চুরি। সাত অর্ধশতকের মাঝে সর্বোচ্চ লিটন দাসের ৭৬। বোলিংয়েও বেহাল দশা। প্রথম দুই ম্যাচে ১৯ উইকেট নিতে পারলেও শেষ দুই ম্যাচে বাংলাদেশের বোলাররা নিতে পেরেছেন মোটে ৫ উইকেট।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচেই ওয়াংখেড়েতে খেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। যেখানে রীতিমতো উড়ে যায় থ্রি লায়ন্সরা। আগে ব্যাট করে প্রোটিয়ারা পায় ৩৯৯ রানের বিশাল সংগ্রহ। যা তাড়া করতে নেমে ১৭০ রানেই গুটিয়ে যায় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলটা। ২২৯ রানের বড় জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের এমন ছন্দ, বড় আতঙ্কের কারণ দলের জন্য।
তবে শেষ দেখায় বিজয়ী দলের নাম বাংলাদেশ। শুধু ম্যাচ নয়, দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতেই তাদের হারিয়ে সিরিজও জিতেছিল টাইগাররা। জয় পেয়েছিল শেষ বিশ্বকাপেও। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসানের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ২১ রানে হারিয়েছিল প্রোটিয়াদের। আর শেষ ১০ দেখায় পাঁচ জয় আছে বাংলাদেশের। যেখান থেকে অনুপ্রেরণা নিতেই পারে সাকিবরা।
সব মিলিয়ে অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের পাল্লা ভারি বেশ। ২৪ দেখায় ১৮ জয় প্রোটিয়াদের। বাংলাদেশ জিতেছে ৬ ম্যাচে। দুই দলের দেখায় সংগ্রহ তিন শ’ ছুঁয়েছে ৬ বার। যার মাঝে পাঁচবার দক্ষিণ আফ্রিকার। সর্বোচ্চ ৩৬৯ রানও তাদের। বিপরীতে গত বিশ্বকাপে ৩৩০ রান তুলেছিল বাংলাদেশ।
মুখোমুখি দেখায় সবচেয়ে বেশি রান গ্রায়েম স্মিথের, ৫৭২। এই বিশ্বকাপে খেলা ক্রিকেটারদের মাঝে সেরা অবশ্য সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ অধিনায়ক করেছেন ৪৯২ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে কুইন্টন ডি ককের আছে ৪২৮ রান। ৩১২ রান আছে মুশফিকুর রহিমের।
সবচেয়ে বেশি উইকেট কাগিজো রাবাদার, ১৯টি। তিন নম্বরে থাকা সাকিব আল হাসান নিয়েছেন ১৬ উইকেট। ১০ উইকেট আছে তাসকিন আহমেদের।