গাজীপুরে মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ

Slider গ্রাম বাংলা


মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে গাজীপুরের এক পোশাক কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছে। তারা বকেয়া বেতন ভাতা, ঈদ বোনাস, অর্জিত ছুটি ও মাতৃত্বকালীন সুবিধার টাকা পরিশোধের এবং বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।

সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের গেইটের সামনে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে।

ওই দাবিতে তারা প্রায় ৬৬ দিন ধরে লাগাতার আন্দোলন করে আসছে।

পুলিশ, আন্দোলনরত শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান গেইটের সামনে লক্ষীপুরা এলাকার স্টাইল ক্র্যাফট লিমিডেট এবং ইয়াং ওয়ান্স (বিডি) লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা গত জুলাই ও আগস্ট মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা, ঈদুল আজহার আংশিক বোনাস, পাঁচ বছরের অর্জিত ছুটির টাকা ও পাঁচ বছর ধরে জমা রাখা নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন সুবিধার টাকাসহ বিভিন্ন ভাতাদি পাওনা রয়েছে। শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধ না করেই কারখানা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকরা তাদের পাওনাদি পরিশোধের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ একাধিকবার আশ্বাস দিয়ে দিন তারিখ নির্ধারণ করলেও শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধ করেনি। এ নিয়ে শ্রমিকরা ইতোপূর্বে একাধিকবার বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে। শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শণ অধিদফতরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কারখানার মালিক পক্ষের সাথে সমঝোতা চুক্তি হলেও শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধ করা হয়নি। সর্বশেষ রোববার শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু এদিন শ্রমিকরা দিনভর কারখানার সামনে অবস্থান করলেও পাওনাদি পরিশোধ করা হয়নি। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বিকেলে কারখানার সামনে ঢাকা-গাজীপুর সড়ক দীর্ঘসময় অবরোধ করে রাখে।

সোমবারেও সকাল হতে শ্রমিকরা তাদের পাওনাদি জন্য কারখানার সামনে অবস্থান করতে থাকে। কিন্তু পাওনাদি ও মালিক পক্ষের কাউকে না পেয়ে তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। একপর্যায়ে তারা মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে দুপুর ১টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের গেইটের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয় এবং সড়ক অবরোধ করে। এ সময় তারা বিক্ষোভ করে। প্রায় সোয়া ১ঘণ্টা সেখানে অবস্থানের পর তারা পুনঃরায় কারখানার সামনে ফিরে এসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে।

আন্দোলনরত শফিকুল ইসলাম ও হারুন সরকারসহ কয়েক শ্রমিক বলেন, কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধ না করেই হঠাৎ কারখানা বন্ধ রেখেছে। এতে শ্রমিকরা অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তারা প্রায় ৬৬ দিন ধরে লাগাতার আন্দোলন করে আসছে। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। অন্য কোথাও কাজ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখন মরা ছাড়া আর কোনো পথ নেই। তাই শ্রমিকরা মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে আন্দোলনে নেমেছে।

জিএমপির সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউল ইসলাম জানান, এ কারখানায় তিন সহস্রাধিক শ্রমিক কাজ করেন। তারা বেশ কিছুদিন ধরেই বকেয়া বেতন ভাতা ও ঈদবোনাস পরিশোধের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। শ্রমিক অসন্তোষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে।

বকেয়া বেতন বোনাস পরিশোধের দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও অবরোধ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *