গাজা উপত্যকায় স্থল হামলা বিলম্বিত করার জন্য ইসরাইলকে পরামর্শ দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মূলত গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের হাতে বন্দী থাকা লোকদের যত বেশি সম্ভব মুক্ত করার জন্যই এই পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বেশ কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা (পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে) নিউ ইয়র্ক টাইমসকে এ তথ্য জানিয়েছেন বলে পত্রিকাটিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য গত শুক্রবার আমেরিকার দুই বন্দীকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাইডেন প্রশাসন এই অঞ্চলে ইরান-সমর্থিত গ্রুপগুলোর কাছ থেকে মার্কিন লক্ষ্যবস্তুগুলোতে যেকোনো ধরনের সম্ভাব্য হামলা মোকাবেলায় প্রস্তুতি বাড়াতে চাচ্ছে। মার্কিনিরা আশঙ্কা করছেন, যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে ওই আশঙ্কা বাড়বে।
গত ৭ অক্টোবর হামাস সদস্যরা ইসরাইলের ভেতরে ঢুকে হামলা চালানোর পর ওই যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। বলা হচ্ছে, ওই দিন হামাসের আড়াই হাজারের বেশি সদস্য সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে পড়ে। তাদের গুলিতে ১৪ শ’র বেশি লোক নিহত হয়। এছাড়া তারা দুই শতাধিক লোককে গাজায় নিয়ে আসে। তাদের মধ্যে নারী, পুরুষ, শিশু, সৈন্যও রয়েছে।
এদিকে ইসরাইলের বিমান হামলার জবাবে হামাসও রকেট নিক্ষেপ করে যাচ্ছে। ফলে প্রায় দুই লাখ ইসরাইলিকে সরিয়ে নিতে হয়েছে।
ইসরাইলও ভয়াবহ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
পত্রিকাটিকে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র স্থল হামলা পরিত্যক্ত করার জন্য ইসরাইলকে বলছেন না, তবে তাদেরকে আরেকটু অপেক্ষা করতে অনুরোধ করছেন। যুক্তরাষ্ট্র এখনো হামাসকে ধ্বংস করার জন্য ইসরাইলকে সমর্থন করে যাচ্ছে।
এদিকে ইসরাইলের চার প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা টাইমসকে বলেছেন, স্থল হামলা বার বার স্থগিত করা হচ্ছে। তারা এর কারণ জানেন না। তাদের দুজন মনে করেন, বন্দীদের নিয়ে আলোচনার জন্য স্থল হামলা স্থগিত করা হচ্ছে।
দুই মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, স্থল হামলা বিলম্বিত করার বার্তাটি মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড জে অস্টিনের মাধ্যমে ইসরাইলে পাঠানো হয়েছে। তিনি ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্টের সাথে প্রতিদিনই কথা বলেন। গ্যালান্টের এক মুখপাত্র পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেননি।
অধিকন্তু, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রোববার আবারো ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে কথা বলেছেন।
এদিকে নেতানিয়াহুর অফিসের একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনো চাপ পাচ্ছে না, কেবলই সমর্থন পাচ্ছে।’
কাতারের মাধ্যমে বন্দী মুক্তির যে আলোচনা চলছে, তার সাথে পরিচিত সূত্রটিকে হামাস বলেছে যে ইসরাইলের স্থল হামলা হলে বন্দীদের মুক্তির সম্ভাবনা কমে যাবে।
ওই সূত্রটি জানিয়েছে, কাতার ও মার্কিনিরা আশা করছে যে প্রায় ৫০ জন দ্বৈত নাগরিক শিগগিরই মুক্তি পেতে পারে।
সূত্র : আল জাজিরা, টাইমস অব ইসরাইল এবং অন্যান্য