শিশুদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হ্যান্ড-ফুট-অ্যান্ড-মাউথ রোগ। ঢাকা শহরে বর্তমানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। একজন শিশুবিশেষজ্ঞ নয়া দিগন্ত জানিয়েছেন, কম বয়সী শিশুরাই রোগটিতে ভুগছে। চিকিৎসকদের কাছে আসা শিশু রোগীদের ১০ থেকে ২০ শতাংশ ভাইরাসজনিত এ রাগে আক্রান্ত।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক শিশুবিশেষজ্ঞ ডা: মো: আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, তিনিসহ অন্যান্য শিশুবিশেষজ্ঞ চিকিৎকদের চেম্বারে প্রচুর শিশু আসছে এ ধরনের রোগ নিয়ে। কোনো কোনো দিন মোট শিশু রোগীদের ২০ শতাংশ এ রোগ নিয়ে আসছে। তিনি বলেন, রোগটি হলে জ্বর হয় এবং হাতে-পায়ে ও মুখে ফোস্কা হতে পারে এবং তা থেকে কিছুটা পানি ঝরতে পারে। সে কারণে শিশুরা অস্বস্তিতে ভোগে। মূলত অস্বস্তির কারণেই চিকিৎসকদের কাছে শিশুদের নিয়ে আসেন অভিভাবকরা। কিন্তু তারা রোগটি সম্বন্ধে খুবই কম জানেন। ভাইরাসজনিত বলে কোনো ওষুধ ছাড়াই রোগটি এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। তিনি বলেন, এই রোগটি হয়ে থাকে কক্সসেকিভাইরাস নামক একটি ভাইরাস দিয়ে। হ্যান্ড-ফুট-অ্যান্ড-মাউথ রোগের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা বা ওষুধ নেই। লক্ষণ বুঝে চিকিৎসকরা ওষুধ দিয়ে থাকেন। যে লক্ষণ বেশি জোরালো সে লক্ষণের বিরুদ্ধে চিকিৎসক ওষুধ দিতে পারেন। ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং আক্রান্তদের থেকে দূরে থাকার কৌশল অবলম্বন করলে রোগটি থেকে শিশুরা মুক্ত থাকতে পারবে।
হ্যান্ড-ফুট-অ্যান্ড-মাউথ রোগটি হলে শিশুদের মুখে ক্ষত হয়ে থাকে এবং হাতে ও পায়ে র্যাশ ওঠে। ভাইরাসজনিত এ রোগটি হলে জ্বর হয়ে থাকে। একই সাথে গলা ব্যথা, অসুস্থ বোধ করা, গালের ভেতর এবং জিহবায় ফোস্কা দেখা দিতে পারে, হাতের তালুতে ও পায়ের নিচে র্যাশ (লাল দাগ) হতে পারে। কোনো কোনো সময় নিতম্বেও ফোস্কা চোখে পড়তে পারে। তবে র্যাশে কোনো চুলকানি হয় না কিন্তু তা থেকে কোনো কোনো সময় ফোস্কা তৈরি হতে পারে। ত্বকের রঙ অনুসারে র্যাশ লাল অথবা সাদা অথবা ধূসর হতে পারে। ফোস্কা বড় হলেই কেবল বিভিন্ন রঙ ধারণা করা র্যাশ দেখা যায়। হ্যান্ড-ফুট-অ্যান্ড-মাউথ রোগটি হলে শিশুর মধ্যে ক্ষুধামন্দা দেখা দিতে পারে।
ডা: আতিয়ার রহমান বলেন, ভাইরাল এই রোগটির শরীরে প্রবেশের ৩ থেকে ৬ দিনের মধ্যে লক্ষণ দেখা দিতে পারে। জ্বর আসার এক থেকে দুই দিনের মধ্যে মুখে ও গলায় বেদনাদায়ক ঘা দেখা দিতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে হাত ও পা ছাড়াও শরীরের অন্যান্য অংশে ফোস্কা দেখা দিতে পারে।