দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন থানায় চার মাস ধরে বন্দী একটি গরু। রোজ এই গরুকে খাওয়াতে আসেন গরুর মালিক। নিয়মিত পরিচর্যা আর খাওয়াতে পারলেও মালিক গরুটিকে নিতে পারছেন না বাড়িতে।
এতে দীর্ঘশ্বাস ফেলে থানা থেকে প্রতিদিন ফিরে যাচ্ছেন উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের মোশারেফ হোসেন পাটওয়ারী নামের এক ব্যক্তি।
তিনি জানান, চলতি বছরের গত ২৬ মার্চ তার লাল রঙের একটি গরু চুরি হয়। ঘটনাটি তিনি ইউপি চেয়ারম্যানকেও জানান। এর কয়েকমাস পরে লালমোহনের ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নেয়ামতপুর গ্রামের মাহাবুব আলমের ছেলে রুবেলের কাছ থেকে দুইটি গরু চোরাই সন্দেহে উদ্ধার করে পুলিশ।
উদ্ধারের পর থানায় এসে নিজের গরুটি শনাক্ত করেন মোশারেফ হোসেন পাটওয়ারী। আরেকটি গরু সিরাজ নামে একজনের। সিরাজ মামলা করেন চোর রুবেলের বিরুদ্ধে। ওই মামলায় স্বাক্ষী হন মোশারেফ হোসেন। এরপর পুলিশ রুবেলকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়।
মোশারেফ হোসেন আরো জানান, সিরাজের শনাক্ত করা গরুটি ফিরিয়ে দেয়া হলেও আমারটি ফেরত পাইনি এখনো। কারণ রুবেল চরফ্যাশনের মোতালেব হাওলাদারের হাট থেকে গরুটি কিনেছেন বলে একটি ভুয়া ক্রয় রশিদ দাখিল করেন। মামলাটি বিচারাধীন থাকায় আদালত থেকে ঘটনার তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে। এরপর তিনি তদন্তের মাধ্যমে গরুটির মূল মালিক আমাকে শনাক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেন।
ওই প্রতিবেদনে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জয়াধর মুমু উল্লেখ করেন, রুবেল মামুন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে গরু কিনেছেন বলে রশিদ দেখালেও সেই মামুনকে উপস্থিত করতে পারেননি। প্রকৃত পক্ষে মামুনের কোনো অস্তিত্ব নেই। তা কেবল সাজানো। একইসাথে তিনি গরুটির প্রকৃত মালিক মোশারেফ হোসেন পাটওয়ারীর বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।
গরুর মালিক মোশারেফ পাটওয়ারী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গরুটি থানায় বন্দি থাকায় রোগাক্রান্ত হচ্ছে। এ জন্য আমি গরুটি দ্রুত ফেরত চাই। একইসাথে চোরের শাস্তি কামনা করছি।
লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাহবুব উল আলম দৈনিক নয়াদিগন্তকে জানান, মালিক নির্ধারণ করে আদালতের নির্দেশনা পেলে গরুটি আমরা ফেরত দিয়ে দেব।