আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। সাত বছরে প্রথমবার ভারতের মাটিতে পাকিস্তানের ম্যাচ দেখতে গ্যালারিতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। যেদিকে চোখ যায়, কেবলই দেখা মিলেছে ভারতীয় সমর্থকদের উল্লাস। দেশের মাটিতে দীর্ঘদিন পর এই হাইভোল্টেজ ম্যাচ উপভোগ করেছে ভারত। ফলস্বরূপ তাদের দাপট চোখে পড়েছে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। ৭ উইকেটের দাপুটে জয়ে পাকিস্তানের জয়যাত্রা থামিয়েছে স্বাগতিকরা।
১৯১ রানে পাকিস্তানকে গুটিয়ে দিয়ে জয়ের পাল্লা নিজেদের দিকে ভারি করেছিল ভারত। বাকি ছিল ব্যাটিংয়ের আনুষ্ঠানিকতা। রোহিত শর্মার ব্যাটে চড়ে ৩ উইকেট হারিয়ে জিতলো স্বাগতিকরা।
বিশ্বকাপের তিন ম্যাচে ভারত তৃতীয় জয় পেলো সাত উইকেটে। আর টানা দুই ম্যাচ জয়ের পর অপরাজিত থাকার মর্যাদা হারালো পাকিস্তান।
ছোট লক্ষ্যে নেমেই আগ্রাসী রোহিত শর্মা। শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে তার চারে ভারত রানের খাতা খোলে। ডেঙ্গু থেকে সুস্থ হয়ে এদিন একাদশে জায়গা পান শুবমান গিল। তারও শুরুটা দারুণ ছিল। ইনিংসের তৃতীয় বলে বাউন্ডারি মারেন। পরের ওভারে হাসান আলী তার কাছে তিনটি চার হজম করেন। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেননি ইষান কিষাণের স্থলাভিষিক্ত এই ব্যাটার। ১১ বলে চারটি চারে ১৬ রানে থামেন ভারতীয় ওপেনার। শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে শাদাব খানের ক্যাচ হন গিল।
দুই নম্বরে নেমে রোহিতের ঝড়ের সঙ্গে তাল মেলাতে পারেননি বিরাট কোহলি। ৪২ বলে ৫৬ রানের জুটিতে তার অবদান ছিল কেবল ১৬ রান। ১৮ বলের ইনিংসে ছিল তিনটি চার, যার সবগুলো ছিল আফ্রিদির বলে।
ডাক মেরে বিশ্বকাপ শুরু করা রোহিত ৩৬ বলে বিশ্বকাপে দ্বিতীয়বার পঞ্চাশ ছোঁন। তিনটি চার ও চারটি ছয় মারেন হাফ সেঞ্চুরি করতে। টানা দ্বিতীয় ও বিশ্বকাপের অষ্টম শতক হাঁকানোর পথে ছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক। কিন্তু পারেননি। শাহীনের বলে মিডউইকেটে ইফতিখার আহমেদের ক্যাচ হন তিনি। দারুণ এক ইনিংস খেললেও আফসোস নিয়ে মাঠ ছাড়েন এই ওপেনার। রোহিতের ৮৬ রানের ইনিংস ছিল ৬৩ বলের, ছয়টি করে চার ও ছয় মারেন। সবচেয়ে বেশি চড়াও হন তিনি হারিস রউফের ওপর। ছয় ছক্কার মধ্যে তিনটিই মেরেছেন পাকিস্তানি পেসারের বলে। শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে ৭৭ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন রোহিত।
আইয়ারকে সঙ্গ দিতে নামেন লোকেশ রাহুল। দুজনে মিলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। শেষ দিকে এসে আইয়ারের হাফ সেঞ্চুরির জন্য রাহুল রক্ষণাত্মক খেলেছেন। তার দেওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি আইয়ার। ৩১তম ওভারের তৃতীয় বলের মোকাবিলার আগে হাফ সেঞ্চুরির জন্য প্রয়োজন ছিল ১ রান এবং জয়ের জন্য ৪ রান। লং অফ দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে হাফ সেঞ্চুরি ও জয় দুটোই আদায় করেন ডানহাতি ব্যাটার।৬২ বলে তিন চার ও দুই ছয়ে ৫৩ রানে অপরাজিত ছিলেন আইয়ার।
তিন ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে গেলো ভারত। সমান পয়েন্ট পেলেও নেট রান রেটে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় স্থানে নিউজিল্যান্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান: ৪২.৫ ওভারে ১৯১/১০ (শফিক ২০, ইমাম ৩৬, বাবর ৫০, রিজওয়ান ৪৯, সৌদ ৬, ইফতিখার ৪, শাদাব ২, নওয়াজ ৪, হাসান, ১২, রউফ ২, আফ্রিদি ২*; বুমরা ২/১৯, সিরাজ ২/৫০, হার্দিক ২/৩৪, কুলদীপ ২/৩৫, জাদেজা ২/৩৮, শার্দুল ০/১২)
ভারত: ৩০.৩ ওভারে ১৯২/৩ (রোহিত ৮৬, গিল ১৬, কোহলি ১৬, আইয়ার ৫৩*, রাহুল ১৯*; আফ্রিদি ২/৩৬, হাসান ১/৩৪, নওয়াজ ০/৪৭, হারিস ০/৪৩, শাদাব ০/৩১)
ফল: ভারত ৭ উইকেটে জয়ী