সংক্ষিপ্ত স্কোর: নিউজিল্যান্ড ৪২.৫ ওভারে ২৪৮/২ (মিচেল ৮৯*, ফিলিপস ১৬*, উইলিয়ামসন ৭৮ রি/হা, কনওয়ে ৪৫, রাচিন ৯)
বাংলাদেশ ৫০ ওভারে ২৪৫/৯ (মাহমুদউল্লাহ ৪১*, শরিফুল ২*, মোস্তাফিজ ৪, তাসকিন ১৭, মুশফিকুর রহিম ৬৬, তাওহীদ হৃদয় ১৩, লিটন ০, তানজিদ হাসান ১৬, মেহেদী হাসান ৩০, নাজমুল হোসেন শান্ত ৭, সাকিব আল হাসান ৪০)
ফল: নিউজিল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী।
ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দাপট দেখানোর পর বাংলাদেশকেও পাত্তা দিলো না নিউজিল্যান্ড। ২৪৫ রানে প্রতিপক্ষকে আটকে দেওয়ার পর ৮ উইকেটে জিতলো তারা। ৪৩তম ওভারের পঞ্চম বলে ড্যারিল মিচেল ছক্কা মেরে জয় নিশ্চিত করেন। ২ উইকেট হারিয়ে ৪৩ বল হাতে রেখে বাংলাদেশকে টানা দ্বিতীয় পরাজয়ের স্বাদ দিলো কিউইরা। মিচেল ৬৭ বলে ৬ চার ও ৪ ছয়ে ৮৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।
১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন গ্লেন ফিলিপস। তবে প্যাভিলিয়নে বসে দলের জয় দেখতে হতো তাকে। নিউজিল্যান্ড জেতার আগের ওভারে মিডঅনে তাসকিন আহমেদ তার ক্যাচ নিতে পারেননি, তখন ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন কিউই ব্যাটার।
রিটায়ার্ড হার্ট উইলিয়ামসন
দলীয় রান ২০০ ছুঁতেই রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়লেন কেন উইলিয়ামসন। ৭৮ রানে খেলছিলেন তিনি। বৃদ্ধাঙ্গুলিতে অস্বস্তিবোধ করতে দেখা গেছে তাকে। ১০৭ বলে ৮ চার ও ১ ছয়ে সাজানো ছিল তার ইনিংস। মিচেলের সঙ্গে উইলিয়ামসনের জুটি ছিল ১০৮ রানের।
উইলিয়ামসনের পর মিচেলের হাফ সেঞ্চুরি
কেন উইলিয়ামসনের পর ড্যারিল মিচেলও হাফ সেঞ্চুরি উদযাপন করলেন। ৩৭তম ওভারে সাকিব আল হাসানকে ছক্কা মেরে ফিফটি করেন তিনি। ৪৩ বলে দুটি করে চার ও ছয় মেরে পঞ্চাশের দেখা পান। ৩৭ ওভারে ২ উইকেটে ১৯০ রান নিউজিল্যান্ডের।
হাফ সেঞ্চুরিতে উইলিয়ামসনের প্রত্যাবর্তন
হাঁটুর চোট থেকে সেরে উঠতে দাঁত চেপে লড়াই করেছিলেন কেন উইলিয়ামসন। বিশ্বকাপে দলের সঙ্গে ভারতে এসে দুই ম্যাচ ছিলেন দর্শক। বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচে পরলেন জাতীয় দলের জার্সি। প্রত্যাবর্তন স্মরণীয় করে রাখলেন হাফ সেঞ্চুরি করে। ৮১ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ফিফটি করেন তিনি।
কনওয়ে-উইলিয়ামসনের জুটি ভাঙলেন সাকিব
ডেভন কনওয়ে ৪ রানে জীবন পেয়ে শক্ত অবস্থান নেন। তবে হাফ সেঞ্চুরি করতে পারলেন না। ৪৫ রান করে সাকিব আল হাসানের কাছে এলবিডব্লিউ তিনি, রিভিউ নিলেও আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেননি। তাতে ভাঙলো ৮০ রানের জুটি। ৯২ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারালো নিউজিল্যান্ড। ৫৯ বলে ৩ চারে সাজানো ছিল কনওয়ের ইনিংস্
উইলিয়ামসন-কনওয়ের জুটিতে অস্বস্তিতে বাংলাদেশ
ডেভন কনওয়েকে ৪ রানে জীবন দেয় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের এই ওপেনারই ভোগাচ্ছেন। ১২ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে নিয়ে কিউইদের এগিয়ে নিচ্ছেন তিনি। ১৩ ওভারে ১ উইকেটে ৬০ রান নিউজিল্যান্ডের।
কনওয়ের ক্যাচ ছেড়ে হতবাক মিরাজ
সপ্তম ওভারে নিউজিল্যান্ডের আরেক ওপেনার ডেভন কনওয়ের উইকেটটি নিতে পারতেন মোস্তাফিজুর রহমান। তার বলে কনওয়ে স্কয়ার ড্রাইভ করেন, মেহেদী হাসান মিরাজ বাঁ দিকে পুরোপুরি ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু তার হাত ফসকে যায় বল। ক্যাচটা কঠিন হলেও আফসোসে পোড়েন মিরাজ। ৪ রানে জীবন পান কনওয়ে।
রাচিনকে মুশফিকের ক্যাচ বানালেন মোস্তাফিজ
প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৪ রান তোলা নিউজিল্যান্ডকে পথে ফেরানোর আভাস দেন রাচিন রবীন্দ্র। তৃতীয় ওভারের প্রথম তিন বলে মোস্তাফিজুর রহমান তার কাছে দুটি চার হজম করেন। এরপরই উইকেট উদযাপন। বাঁহাতি কাটার মাস্টার ৯ রানে রাচিনকে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানান। ১২ রানে বাংলাদেশ পেলো প্রথম উইকেট।
মাহমুদউল্লাহর শেষ দিকের ঝলকে বাংলাদেশের ২৪৫
১৮০ রানে সাত উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ক্রিজে একমাত্র প্রতিষ্ঠিত ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ। দলের দুইশ রান হওয়া নিয়েই ছিল সংশয়। এই অভিজ্ঞ ব্যাটারের ব্যাটে চড়ে ৯ উইকেটে ২৪৫ রান করলো বাংলাদেশ।
তাসকিন আহমেদের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর ৩৪ রানের জুটিতে স্কোর দুইশ ছাড়ায়। তারপর মোস্তাফিজুর রহমান বিদায় নিলে শেষ দুই ওভারে একটি করে ছক্কা মেরে স্কোর আড়াইশর ঘরে নেওয়ার ইঙ্গিত দেন তিনি। কিন্তু পারেননি। তবে তার শেষ দিকের ঝলকে লড়াই করার মতো সংগ্রহ হলো বাংলাদেশের। ৪৯ বলে দুটি করে চার-ছয়ে ৪১ রানে অপরাজিত ছিলেন মাহমুদউল্লাহ।
হেনরির শিকার মোস্তাফিজ
মোস্তাফিজুর রহমানকে ফিরিয়ে নবম উইকেট তুলে নিলো নিউজিল্যান্ড। ম্যাট হেনরির বলে টম ল্যাথামের ক্যাচ হন তিনি ৪ রান কের।
ছক্কা মারার পর তাসকিন প্যাভিলিয়নে
৪২তম ওভারের পঞ্চম বলে লকি ফার্গুসনকে চার মেরে বাংলাদেশের স্কোর দুইশতে নিলেন মাহমুদউল্লাহ। তাসকিন আহমেদ তার সঙ্গে বড় জুটি গড়ার আভাস দিচ্ছিলেন। ৪৪তম ওভারে মিডউইকেটের ওপর দিয়ে বড় ছক্কা মারেন। তবে পরের ওভারে মিচেল স্যান্টনারকে সুইপ করতে গিয়ে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ারে ড্যারিল মিচেলের ক্যাচ হন তাসকিন, ১৭ বলে করেন ১৭ রান। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে তার জুটি ছিল ৩৪ রানের। ২১৪ রানে ৮ উইকেট হারালো বাংলাদেশ।
বোল্টের ২০০তম শিকার হৃদয়
সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের ৯৬ রানের জুটি ভাঙার পর ফের বিপদে বাংলাদেশ। ২৮ রানের ব্যবধানে আরও তিন উইকেট হারালো তারা। ম্যাট হেনরির বলে ৬৬ রানে থামেন মুশফিক। এরপর তাওহীদ হৃদয়কে মিচেল স্যান্টনারের ক্যাচ বানিয়ে নিজের ২০০তম ওয়ানডে উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮০ রানে সাত উইকেট হারালো বাংলাদেশ।
৯৬ রানের দারুণ জুটি ভাঙলো সাকিবের বিদায়ে
৫৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে পড়েছিল বাংলাদেশ। কঠিন চাপে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশ তার পর ঘুরে দাঁড়ায় অভিজ্ঞ সাকিব-মুশফিকের দারুণ জুটিতে। ৯৬ রান যোগ করেন তারা। মুশফিকের ফিফটির পর সাকিব আক্রমণাত্মক হয়ে রান তুলছিলেন। সেটাই কাল হয়েছে ২৯.৫ ওভারে। আগের বলে ছক্কা মারা সাকিব ফার্গুসনের এই বলটি পুল করতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়েছেন। ফেরার আগে ৫১ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪০ রান করেছেন তিনি।
মুশফিকের ফিফটি
৪ উইকেট হারানোর পর চাপের মুহূর্তে প্রতিরোধ গড়েছেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। সাকিবের সঙ্গে জুটি গড়ে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ৪৮তম ফিফটি। মুশফিক ফিফটি পেয়েছেন ৫২ বলে। টুর্নামেন্টে এটি তার ব্যাক টু ব্যাক ফিফটি।
সাকিব-মুশফিকের ব্যাটে বাংলাদেশের একশ
৫৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে ইনিংস মেরামতে ভূমিকা রাখেন সাকিব ও মুশফিক। তাদের জুটিতেই বাংলাদেশের স্কোর একশ ছাড়িয়েছে।
শান্তর বিদায়ে আরও বিপদে বাংলাদেশ
মিরাজের আউটের পরের ওভারে বিপদ আরও বাড়ে নতুন নামা নাজমুল শান্ত ৭ রানে ফিরলে। অফস্পিনার গ্লেন ফিলিপসের সাধারণ লেংথ বলে আগেভাগে ব্যাট চালিয়েছিলেন শান্ত। বল লিডিং এজ হলে মিড উইকেটে ডাইভ দিয়ে তার ক্যাচ নেন কনওয়ে।
৩০ রানে ফিরেছেন মিরাজ।৩০ রানে ফিরেছেন মিরাজ।
মিরাজকে থামালেন ফার্গুসন
লিটনকে হারানোর পর শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে রান তুলছিলেন মিরাজ। অপর ওপেনার তানজিদ চলে যাওয়ার পরেও ব্যাট চালিয়ে রান তুলছিলেন। দুই ওপেনারের মতো বাজে শট সিলেকশনের বলি হতে হয় তাকে। ১১.৪ ওভারে ফার্গুসন শর্ট বল করেছিলেন। মিরাজ পুল করতে গেলে ফাইন লেগে হেনরিকে ক্যাচ দিয়েছেন। তাতে ৪৬ বলে ৩০ রানে থেমেছেন তিনি। তার ইনিংসে ছিল ৪টি চার।
পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের ৪৬
পাওয়ার প্লেতে নিজেদের ভুলে দুটি উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। দুই ওপেনারকে হারিয়ে বাংলাদেশ যোগ করেছে ৪৬ রান।
তানজিদইনিংস বড় করতে পারেননি তানজিদ।
তানজিদকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন ফার্গুসন
শুরুতে লিটনের আউটের পর চাপে ছিল বাংলাদেশ। পাল্টা আক্রমণে সেই চাপ দূর করার চেষ্টায় ছিলেন তানজিদ হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ৪০ রানের জুটিও গড়েন তারা। দুই পেসার ট্রেন্ট বোল্ট, ম্যাট হেনরি তাদের পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি। অষ্টম ওভারে ফার্গুসন আক্রমণে এসেই ভেঙে দেন এই জুটি। ফার্গুসনের বলে সরাসরি ফ্লিক করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে কনওয়ের হাতে তালুবন্দি হয়েছেন তানজিদ। ফেরার আগে ১৭ বলে ৪ চারে ১৬ রান করেছেন তিনি।
প্রথম বলেই আউট লিটন
টস হেরে ব্যাট করতে গিয়ে শুরুতেই মারমুখী হওয়ার বিপদ টের পেলেন লিটন দাস। বোল্টকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে ঘুরিয়ে মারতে গেলে হেনরির হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ওপেনিং ব্যাটার। বল কিছুটা ইনসুইংও করেছিল। তাতে ডাক মেরে ফিরেছেন গত ম্যাচের হাফসেঞ্চুরিয়ান।
বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড টস বিশ্বকাপ ২০২৩টসের মুহূর্তের ছবি।
টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছে নিউজিল্যান্ড
বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে উড়ন্ত শুরুর পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে কিছুটা অস্বস্তিতে রয়েছে বাংলাদেশ। আজ তাদের প্রতিপক্ষ টানা দুই ম্যাচ জিতে ফুরফুরে মেজাজে থাকা নিউজিল্যান্ড। চেন্নাইয়ের এম এ চিদম্বরম স্টেডিয়ামে টস জিতে বাংলাদেশকে প্রথমে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছে তারা।
টস জিতে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বলেছেন, ভালো পিচ। পরে শিশির পড়ার সম্ভাবনা আছে। সাকিব অবশ্য বলেছেন, পিচ দেখে পুরোপুরি নিশ্চিত নন যে কেমন আচরণ করবে। তবে শুরুতে ব্যাট করতেও পেরেও সন্তুষ্ট তিনি।
একাদশে ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ
প্রথম ম্যাচে থাকলেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ছিলেন না অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আজ একাদশে ফিরেছেন তিনি।বাংলাদেশ একাদশে আজ একটি পরিবর্তন এনেছে। বাদ পড়েছেন শেখ মেহেদী। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন আজ নিউজিল্যান্ড দলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। বাদ পড়েছেন উইল ইয়াং।
বাংলাদেশ একাদশ
তানজিদ হাসান তামিম, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম (উইকেটকিপার), তাওহীদ হৃদয়, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।
নিউজিল্যান্ড একাদশ
ডেভন কনওয়ে, রাচিন রবীন্দ্র, কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), ড্যারিল মিচেল, টম ল্যাথাম (উইকেটকিপার), গ্লেন ফিলিপস, মার্ক চ্যাপম্যান, মিচেল স্যান্টনার, ম্যাট হেনরি, লকি ফার্গুসন ও ট্রেন্ট বোল্ট।
পরিসংখ্যান কী বলছে?
অতীত পরিসংখ্যান বাংলাদেশের বিপক্ষে। বিশ্বকাপের পাঁচ দেখায় প্রতিবারই হারের তেতো স্বাদ পেতে হয়েছে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। অতীত পরিসংখ্যান বাংলাদেশকে সাহস জোগাতে না পারলেও চেন্নাইরে ভেন্যু ঠিকই বাংলাদেশকে আশাবাদী করে তুলছে। ভারতের সবচেয়ে স্পিন বান্ধব উইকেট ধরা হয় চেন্নাইয়ের চিদম্বরম স্টেডিয়ামটিকে। মিরপুরের সঙ্গে এই মাঠের কিছুটা মিল আছে।