গাজীপুর: স্নাতোকোত্তর ডিপ্লোমা পাশ করে প্রকল্পে তিন বছর চাকুরী করেছি। আমাকে স্থায়ী নিয়োগ দেয়ার কথা বলে সাত লাখ টাকা নিয়েছেন বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউটের(ব্রি) পরিচালক প্রশাসন শাহজাহান কবির। আরো এক লাখ টাকা দিতে না পারায় ইন্টারনেটে রোল নাম্বার দিয়েও কিছুক্ষন পর ডিলেট করা হয়েছে। আমার বয়স শেষ হয়ে যাওয়ায় আর চাকুরীর সম্ভাবনাও নেই। ফলে বিয়েও হচ্ছে না। এখন আমার বাঁচা মরা সমান।
শনিবার(২৫ জুলাই) হৃদয় কাঁপানো ওই অভিযোগ করেছেন গাজীপুর শহরের মেয়ে শরিফা আক্তার পপি।
পপি জানান, তার পিতার নাম আইয়ুব আলী উরফে শাহজাহান। তিনি বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউটে তার বোনের বাসায় থাকেন। তিন বছর ধরে পপি বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউটে(ব্রি) একটি প্রজেক্টে চাকুরী করতেন। চাকুরীরত অবস্থায় বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউটের(ব্রি) পরিচালক(প্রশাসন) শাহজাহান কবির পপিকে এস এ(ফিল্ডম্যান) পদে চাকুরী দেয়ার কথা বলে মোট সাত(৭ লাখ) লাখ টাকা নেয়। অতঃপর লিখিত পরীক্ষায় পাশ করে মৌখিক পরীক্ষা দেয় পপি। মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলে প্রথমে ওয়েবসাইটে পপির রোল নম্বর ৩২৪৩২ দেখা যায়। কিন্তু কিছুক্ষন পর পপির রোল নাম্বার দেখা যায়নি। এর কারণ হিসেবে পপিকে শাহজাহান কবির আরো এক লাখ টাকা না দেয়ার জন্য চাকুরী হয়নি বলে জানান।
পপির অভিযোগ, সাত লাখ টাকা দিয়েও চাকুরী হলনা। আরো এক লাখ টাকা না দেযার অজুহাতে তাকে চাকুরী দেয়া হয়নি। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক কারণে চাকুরীর বয়স শেষ হয়ে যাওয়ায় আর চাকুরীর আবেদনও করা যাবে না। বিয়ের জন্য পাওয়া যাবেনা একজন ভাল বরও। ফলে আর দশটি মেয়ের মত একটি সুন্দর সাাজনো সুখের বাগান এখন পপির স্বপ্নই থেকে যাবে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউট(ব্রি) ২৬ জানুয়ারী দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় ১৬টি ক্যাটাগরিতে ২১ শুন্য পদে লোক নিযোগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। এ ছাড়াও অপর একটি বিজ্ঞপ্তিতে বৈজ্ঞানিক কমকতা(এসও) পদে ১৪ জন লোক নিয়োগের জন্য দরখাস্ত আহবান করে। ১৬ ক্যটাগরির মধ্যে ১নং ক্রমিকে (এসএ)ফিল্ডম্যান পদের ৪টি শুন্যপদের বিপরিতে আবেদন করেন পপি। তার রোল নম্বর ৩২৪৩২।
বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউটের(ব্রি) নিজস্ব ওয়েব সাইট ও একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ৩৫ শুন্য পদে লোক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিলেও বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউট(ব্রি) কর্তৃপক্ষ ৫৮ জন লোক নিয়োগ করেন। অতিরিক্ত লোক নিয়োগ করার বিষয়টি সম্পর্কে বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউট(ব্রি) কর্তৃপক্ষ কোন বক্তব্য দিতে নারাজ।
অসমর্থিত সূত্র জানায়, অনেক লোকের নিকট থেকে নূন্যতম ৭লাখ টাকা ও সর্বোচ্চ ১২ লাখ টাকা উৎকোচ নেয়া হয়েছে। যাদের চাকুরী হয়নি তাদেরকে ভবিৎতে চাকুরী দেয়ার লোভ দেখিয়ে নীরব রাখা হচ্ছে। এই পযায়ে শাহজাহান কবির প্রায় পাঁচ কোটি টাকার মত অবৈধভাবে উপাজন করেছেন। ওই টাকা দিয়ে বতমানে বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউটের(ব্রি) পশ্চিম পাশে একটি বিলাস বহুল বহুতল ভবন নিমান করছেন তিনি। ওই ভবনের ৬তলার কাজ শেষ হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউট(ব্রি) এর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির নিয়োগ কমকতা উপ-পরিচালক( প্রশাসন ও সাধারণ পরিচযা) এমরান হোসেন জানান, এই বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। পরিচালক প্রশাসন শাহজাহান কবির ও ডিজি মহোদয়কে জিঞ্জেস করেন।
বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউট(ব্রি) এর পরিচালক(প্রশাসন ও সাধারণ পরিচযা) শাহজাহন কবিরকে বেশ কয়েক বার ফোন করলে তিনি দুই বারের পর ফোন কেটে দেন।
বাংলাদেশ ধানগবেষনা ইনস্টিটিউট(ব্রি) মহাপরিচালক(ডিজি) জীবন কৃষ্নকে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভি করেননি।