নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা রাখা মানে শিয়ালের কাছে মুরগি দেয়া- এমন মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এবার আশার সঞ্চার হয়েছে, আমরা জয়ী হবোই।’
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্রঐক্য’র উদ্যোগে আয়োজিত এক কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সর্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা, নিরাপদ ক্যাম্পাস ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে বিরোধী ১৪টি সংগঠনের জোট ছাত্রঐক্য এ কনভেনশনের আয়োজন করা হয়। তবে মুখ্য ভূমিকায় ছিল ছাত্রদল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা একটা যুদ্ধে নেমেছি, সেই যুদ্ধের কারণ একটি ভয়াবহ দানবীয় শক্তি দেশের ক্ষমতা জোর করে ক্ষমতায় থাকা অর্থাৎ বিচারকের ভাষায়- ‘জাহানামের আগুন’ বানিয়েছে, তাদেরকে একটা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ফেলে দেয়ার যুদ্ধে আমরা নেমেছি।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র কনভেনশন আজ আমাদেরকে আশা জাগিয়েছে। এ দেশে যা কিছু অর্জন সব তার এই ছাত্ররা করেছে।’
সাবেক ছাত্রনেতা ও বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীকে পুলিশি নির্যাতনের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ ক্ষোভ, প্রতিবাদ জানানোর ভাষা আমার নেই, এ লজ্জা আমাদের সকলের। বিশেষ করে এ লজ্জা তোমাদের (বর্তমান ছাত্রনেতারা)।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে এবার আশার সঞ্চার হয়েছে, এবার আমরা তোমাদের নিয়ে যুদ্ধে জয় জয়ী হবোই।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বলছে নির্বাচনের বিষয়ে তাদের প্রতি আস্থা রাখতে। কিন্তু আমি বলবো, তাদের প্রতি আস্থা রাখা মানে হচ্ছে শিয়ালের কাছে মুরগি দেয়া। অনেক হয়েছে, এনাফ ইজ এনাফ।’
একটি উপকথার উদাহরণ দিয়ে সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তুমি যতই ঘুরো, ঘুরে কোনো লাভ নেই। তোমার চলে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে। এদের (সরকার) ওপর দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। তাদের হাত থেকে রক্ষা চায় দেশের মানুষ।’
তিনি আরো বলেন, ‘পদ্মা সেতু, টানেল, উড়াল সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বানিয়েছেন। এতকিছু বানিয়েছেন, তবুও ভোট দিতে কেন এত ভয়। ভোট তো জনগণ আপনাকেই দিবে। এতই যদি জনপ্রিয় হোন, দেন না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তা করবেন না। কারণ আপনি জানেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আপনার অস্তিত্ব থাকবে না।’
‘ছাত্রঐক্যের মধ্য দিয়ে নিঃসন্দেহ এই দানবের পরাজয় ঘটিয়ে একটি মানবিক, নতুন সমাজ, মুক্ত সমাজ গড়ে উঠবে,’ বলেন মির্জা ফখরুল।
ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল, জাগপার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, সাংবাদিক নেতা আব্দুল হাই শিকদার প্রমুখ।
ছাত্র কনভেনশন উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজজামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিবুন নবী খান সোহেল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, বর্তমান সহ-সভাপতি নাছির উদ্দিন নাছির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালেহ মো: আদনান, সাবেক জাগপা ছাত্রলীগ নেতা ও যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমু প্রমুখ।