আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পিটার হাসকে (ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত) দেখিয়ে নির্বাচন বন্ধ করবেন, ঢাকায় তাণ্ডব করবেন, সেই খেলা খেলতে দেব না। তার মুরুব্বিদের সাথে কথা হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে এদেশে নজিরবিহীন নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। তার সরকারের নজিরবিহীন উন্নয়নের মতোই নির্বাচন হবে নজিরবিহীন শান্তিপূর্ণ।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন হবে বাংলাদেশে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা বেঁচে থাকলে এই দেশে নির্বাচন কেউ বন্ধ করতে পারবে না। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে। এ দেশে নজিরবিহীন উন্নয়ন করেছেন শেখ হাসিনা। নজিরবিহীন নিরপেক্ষ নির্বাচন শেখ হাসিনাই করবেন। নজিরবিহীন নিরপেক্ষ নির্বাচন হবেই।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ক্ষমতার পথ আপনারাই বন্ধ করে দিয়েছেন। পিটার হাস সাহেব কি করবেন? ভিসা নীতি দিবেন? কি করবেন নিষেধাজ্ঞা দিবেন? পিটার হাস সাহেবের মুরুব্বিদের সাথে আমাদের কথা হয়ে গেছে। আমেরিকার মুরুব্বী যারা তাদের সাথে কথাবার্তা শেষ। উচ্চ পর্যায়েও কথাবার্তা হয়ে গেছে। তলে তলে যখন সব শেষ তখন আর এসব করে লাভ কি? পিটার হাসকে দেখিয়ে নির্বাচন বন্ধ করবেন, ঢাকায় তাণ্ডব করবেন, সেই খেলা খেলতে দেব না। সেই খেলা সন্ত্রাসের খেলা, বিএনপিকে এই খেলা খেলতে দেবো না।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেব নির্বাচনে না আসলে আমও যাবে, ছালাও যাবে। দুইটাই হারাবেন। দুনিয়াব্যাপী আপনারা বদনাম করেছেন, দেশে দেশে বদনাম করছেন, শেখ হাসিনা এমন নির্বাচন করবেন, যে নির্বাচন হবে নজিরবিহীন। ফখরুল সাহেব সুযোগ হারালে আর পাবেন না।’
তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুলের সর্বশেষ বক্তৃতা শুনে মনে হল, মির্জা ফখরুল এখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মরা লাশ নিয়ে টানাটানি করছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার মরা লাশ। আজিমপুরের গোরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত। গোরস্থান থেকে ফখরুল এখন ওই মরা লাশ টেনে আনছে। এই মরা লাশের মুক্তি আসবে না।’
২০০৪ সালের ২১ আগস্টকে স্মরণ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজকে এখানে দাঁড়ালে বিএনপির সেই নৃশংস চরিত্র আমাদের চোখের সামনে আসে। এই বিএনপি ওই বিল্ডিং থেকে গ্রেনেড মেরে আমাদের নেত্রীকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আমাদের ২৩টি প্রাণ সেদিন রক্তাক্ত করেছিল। আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছিলাম। এই সেই বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, এখানে এলে বিএনপি কত ভয়ংকর, বিএনপি কত নিষ্ঠুর, সেই ছবি আমরা বারবার দেখতে পাই। কাজেই প্রস্তুত থাকতে হবে, সবদিক থেকেই খেলা হবে। ওরা ফাউল করবে, ফাউলের জবাব দিতে হবে। লাল কার্ড দেখাতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সেদিন বলেছিলাম রূপপুর ইউরেনিয়ামের চালান আসছে। ফখরুল, মির্জা আব্বাসরা বলে, মঈন খানরা বলে, রূপপুর বন্ধ করে দেবে। ইউরিনিয়াম যেটা আছে সেটা সারা দুনিয়া স্বীকৃত। এই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করে আমরা ইউরেনিয়াম ক্লাবে ৩৩ নম্বরে যুক্ত হয়েছি। এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যারা বন্ধ করে দিতে চায়, আমরা এত কোটি কোটি টাকার ইউরিনিয়াম কেন আনলাম, এজন্য বলেছি ওদের মাথার উপর ঢালবো।’
বিএনপিকে আমেরিকা রোগে পাইছে মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আর কাউকে তো পায় না। ওইভাবে আমেরিকানরাও আসে না। পাত্তা দেয় না। দৌড়ে যায় পিটার হাসের কাছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে পিটার হাস, দুপুরে লাঞ্চ করতে যায় পিটার হাস, রাতে ডিনার করতে যায় পিটার হাস। আমি জানি না হাস ফখরুলকে কী স্বপ্ন দেখিয়েছে। তবে ক্ষমতার স্বপ্ন দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। ফখরুল সাহেব, দিল্লি বহু দূর।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এখন কোয়ার্টার ফাইনাল, সামনে সেমিফাইনাল, ফাইনাল হবে জানুয়ারিতে। খেলা হবে সারা ঢাকায়, খেলা হবে চট্টগ্রামে, খেলা হবে সিলেটে, খেলা হবে রাজশাহীতে, খেলা হবে বরিশালে, খেলা হবে খুলনায়, খেলা হবে সারা বাংলায়। ঠিক আছে, ফাইনাল পর্যন্ত খেলতে হবে। এখনই ক্লান্ত হলে চলবে না।’
আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমদ মান্নাফীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো: হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এবং এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন।
সূত্র : বাসস