ইংলিশদের চেপে ধরলো বাংলাদেশ, উইকেটও তুলে নিল দ্রুত। তবে ততক্ষণে হয়ে গেছে বহু দেরি, থ্রি লায়ন্সরা গড়ে ফেলেছে বড় সংগ্রহের ভিত। বোলারদের তালগোল পাকিয়ে ফেলার সুযোগ নিয়ে ইংলিশ টপ অর্ডার হয়ে ওঠে আগুনে। মিডল অর্ডার যদিও ব্যর্থ, তবুও ইংলিশরা পেয়ে গেছে ৩৬৪ রানের বিশাল সংগ্রহ।
বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ৩৬৫ রান। জিততে হলে রেকর্ড ভাঙতে হবে লিটন-সাকিবদের। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহই যেখানে ৩৩৯, সেখানে ৩৬৫ খুবই দূরূহ নিঃসন্দেহে। তাছাড়া ধর্মশালার মাঠে সর্বোচ্চ সংগ্রহ আগে ছিল ৩৩০, দ্বিতীয় ইনিংসে যেটা ২৭১! ফলে কঠিন চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশ।
ধর্মশালায় বল হাতে ধারালো হয়ে উঠতে পারেননি তাসকিন-মোস্তাফিজরা। আফগানিস্তানের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও পাওয়ার প্লেতে নিষ্প্রাণ তারা। রান বিকোচ্ছে বড়লোকের বিগড়ে যাওয়া ছেলের মতো করে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভালো করা স্পিনাররাও দেখেছেন চোখে সর্ষেফুল।
কোনো চাপ সৃষ্টি করতে পারেননি বোলাররা। বলা যায় টসে জিতে আগে বল নেয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাতে ব্যর্থ তারা। সুযোগ কাজে লাগিয়ে ১৫.৩ ওভারেই বিনা উইকেটে ইংলিশরা তুলে নেয় দলীয় শতক। ফিফটি তুলে নেন দুই ওপেনার; জনি বেয়ারেস্টো ও ডেভিড মালান।
সবাই যখন একে একে ব্যর্থ এই দু’জনকে চেপে ধরতে, অধিনায়ক সাকিব তখন শুরু থেকেই নজর কাড়ছিলেন নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে। যার সুফল মেলে ১৮তম ওভারে এসে। সাকিব ভাঙেন জনি বেয়ারেস্টোর উইকেট। তাতে ভাঙে ইংলিশদের ১১৫ রানের উদ্বোধনী জুটি। বেয়ারেস্টোর ব্যাটে আসে ৫৯ বলে ৫২ রান।
তাতে কিছু সময়ের জন্য রানের গতি কমে আসলেও, খানিকটা পরই ফেরে পুরনো রূপ। জো রুটকে নিয়ে ফের জুটি দাঁড় করিয়ে তোলেন মালান। উভয় প্রান্ত থেকে শুরু হয় আক্রমণ। এই জুটিও ছাড়িয়ে যায় শতরানের গণ্ডি। ব্যক্তিগত শতক তুলে নেন ডেভিড মালান। ৯১ বলে তিন অংকের এই ম্যাজিক্যল ফিগারে পৌঁছান।
বিশ্বকাপে নিজের প্রথম শতক তুলে নিয়ে আরো বিধ্বংসী হয়ে উঠেন মালান। ইংল্যান্ডও অনায়াসেই পেরিয়েছে ২০০ রান। জো রুটও তুলে নেন ফিফটি। দেড় শতাধিক রান আসে দুজনের জুটি থেকে। মাত্র ১১৭ বলে যোগ হয় ১৫১ রান!
ভয়ংকর হয়ে ওঠা এই জুটি ভাঙেন শেখ মেহেদী। ডেভিড মালানকে ফিরিয়েই থামান এই ঝড়। তবে ততক্ষণে পেরিয়ে গেছে ৩৭.২ ওভার, স্কোরবোর্ডে উঠে গেছে ২৬৬ রান। মালানও খেলে ফেলেছেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস, আউট হন ১০৭ বলে ১৪০ রান করে।
দুই ওভার পর ফেরেন ইংলিশ অধিনায়ক জশ বাটলার, শরিফুলের শিকার হবার আগে ১০ বলে ২০ রান আসে তার ব্যাটে। এক ওভার পর ফের আক্রমণে এসে জোড়া আঘাত আনেন শরিফুল, খানিকটা স্তম্ভিত করেন রানের গতি।
৪১.৫ ওভারে শরিফুল ফেরান সেঞ্চুরির পথে হাঁটা জো রুটকে, মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানিয়ে তাকে ফেরান ৬৮ বলে ৮২ রানে। পরের বলেই স্ট্যাম্প ভাঙেন লিয়াম লিভিংস্টোনের, গোল্ডেন ডাক উপহার দেন তাকে। ইংলিশদের সংগ্রহ তখন ৪২ ওভারে ৩০৭/৫।
সেখান থেকে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করেন হ্যারি ব্রুক, তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৫ বলে ২০ করে শেখ মেহেদীর দ্বিতীয় শিকার তিনি। মেহেদী এরপর ফিরিয়েছেন স্যাম কারান আর আদিল রাশিদকেও। ৮ ওভারে ৭১ রানে ৪ উইকেট নেন এই স্পিনার।
৩৭ ওভারে ১ উইকেটে ২৬৬ রান করা ইংলিশরা শেষ ১৩ ওভারে যোগ করে ৯৮ রান, তবে হারায় আরো ৮ উইকেট। সব মিলিয়ে ৯ উইকেটে ৩৬৬ করে থামে ইংল্যান্ডের ইনিংস।