ঢাকা সফররত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনি পর্যবেক্ষণ মিশনের কাছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ করতে করণীয় পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেছে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করে প্রতিনিধি দলটি। পরে বৈঠকের মূল আলোচনার বিষয় প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘মূল ফোকাসটা হচ্ছে ফ্রি, ফেয়ার, পার্টিসিপেটরি অ্যান্ড পিসফুল ইলেকশন। …প্রতিনিধিরা যা যা জানার সব জেনেছেন; আমরা বোঝাতে পেরেছি। এখন তারা সিদ্ধান্ত নেবেন অবজারভার টিম পাঠাবে কিনা, পাঠালে কবে-কীভাবে পাঠাবে।’
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি যাচাই করতে শনিবার ঢাকায় পৌঁছায় যুক্তরাষ্ট্রের ছয় সদস্যের এই প্রাক-নির্বাচনি পর্যবেক্ষক দল। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত তারা বাংলাদেশে অবস্থান করবেন। ইতোমধ্যে তারা আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
এছাড়া বিভিন্ন সরকারি দফতর, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, নারী সমাজ, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম এবং ঢাকার বিদেশি মিশনের কূটনীতিকদের সঙ্গেও তাদের বসার কথা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) যৌথভাবে এই সমীক্ষা মিশন পরিচালনা করছে। সফর শেষ হলে এই পর্যবেক্ষণ দলের তরফ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচন আয়োজন বিষয়ে তাদের যদি কোনো উদ্বেগ থাকে, তা জানানোর পাশাপাশি সুপারিশ থাকলে তাও তারা জানাবে।
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে মঙ্গলবার নির্ধারিত বৈঠক শেষে সিইসি জানান, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি প্রি-ইলকেশন অ্যাসেসমেন্ট মিশন (মার্কিন সরকারের প্রতিনিধি নয়) এসেছে। এরইমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সরকারের দফতরের সঙ্গে তারা বৈঠক করেছেন।
তিনি বলেন, দলটি এসেছে মূলত প্রি-অ্যাসেমেন্টের জন্য। তারা কী করবে আমরা জানি না। আমাদের কাছে যে প্রশ্নগুলো করা হয়েছে, আমাদের ইলেকশন কমিশনের রুল, দায়িত্ব ও অ্যাকটিভিটিজ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে চেয়েছেন। আমরা সব বোঝাতে পেরেছি। বৈঠকে ইসি ও সরকারের ভূমিকাসহ নির্বাচন প্রক্রিয়ার সার্বিক বিষয় তুলে ধরা হয়েছে কমিশনের পক্ষ থেকে।’
সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনে ইসি কী রুল প্লে করে, গভর্নমেন্টের রুল কতটুকু, কীভাবে প্লে করে; সরকারের সঙ্গে ইলেকশন কমিশনের কো-অর্ডিনেশন কীভাবে হয়, যার মাধ্যমে পুরো ইলেকশন প্রসেসটা তুলে নিয়ে আসি; তাদের আমরা তা জানিয়েছি। তারা যা যা জানতে চেয়েছেন, জেনেছেন। জেনে এখন তারা কী করবেন আমরা জানি না। পরে দেশে ফিরে গিয়ে এটা পর্যালোচনা করে হয়তো সিদ্ধান্ত নেবেন, তারা কোনও অবজারভার টিম পাঠাবেন কিনা, পাঠালে কীভাবে পাঠাবে।’ এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে চাননি সিইসি।
আলোচনার মূল ফোকাস কী ছিল জানতে চাইলে সিইসি কাজী হাবিুল আউয়াল বলেন, ‘তারা অ্যাসেসমেন্ট করতে এসেছেন। মূল ফোকাসটা হচ্ছে ফ্রি, ফেয়ার, পার্টিসিপেটরি অ্যান্ড পিসফুল ইলেকশন।’
আগামী ডিসেম্বরের মাসের শেষ সপ্তাহে বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। এ নির্বাচনকে ঘিরে বিবদমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জুলাইয়ে ইইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি পর্যবেক্ষণ টিমও এসেছিল। তারা ইতোমধ্যে বাজেট স্বল্পতার কারণে পর্যবেক্ষক না পাঠানোর বিষয়টি তুলে ধরেছে।