ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকাকে ‘পুরোপুরি’ অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়েছে। এ সময় তিনি জানান, সেখানে কোনো খাবার ও জ্বালানিও ঢুকতে দেয়া হবে না।
এদিকে, জুবিলি উদ্বাস্তু শিবিরে ইসরাইল আকাশপথে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। এতে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছে।
ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের তৃতীয় দিনে আজ সোমবার এ হামলা চালানো হয়।
সর্বশেষ প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, এ যুদ্ধের তৃতীয় দিনে সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা পর্যন্ত ৫১৬ জন ফিলিস্তিনি এবং ৮০০ জন ইসরাইলি নিহত হয়েছে।
এদিকে, রিফাত আল আরির নামে গাজার একজন বাসিন্দা আলজাজিরাকে জানিয়েছেন, তাদেরকে ইসরাইলি বোমার মুহুর্মুহু শব্দের মধ্যে রাত পার করতে হয়েছে।
ইসরাইলের অবরুদ্ধ এ উপত্যকায় যে পরিমাণ বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না বলে জানিয়েছেন রিফাত। তিনি জানান, গাজা জুড়েই, বিশেষত মসজিদ, ব্যবসাকেন্দ্র ও আবাসিক এলাকাগুলোতে যেখানে ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় নিয়েছে সেসব এলাকাকে টার্গেট করে প্রচুর বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল।
‘গত রাতে আমরা যা দেখেছি তা আগে কখনো দেখিনি। আমরা একটুও ঘুমাতে পারিনি। পরিস্থিতি খুবই ভয়ঙ্কর ছিল,’ বলেন তিনি।
রিফাত বলেন, ‘আমি মনে করি এটা মাত্র শুরু। কারণ তারা একটি মিনিটের জন্যও আক্রমণ থামায়নি।’
এদিকে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলো এখন তাদের ‘পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে’।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র দানিয়েল হাগারি সাংবাদিকদের বলেন, কিছু কিছু এলাকায় যুদ্ধ চলমান রয়েছে।
পশ্চিমতীরে চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল
অধিকৃত পশ্চিমতীরে চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। সেখানে প্রায় ২৮ লাখ ফিলিস্তিনি বাস করে।
সেখানকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, লোহার গেট, সিমেন্টের ব্লক এবং মাটির ঢিবি দিয়ে শহরের সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
কিছু জায়গায় নতুন সামরিক চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। জ্বালানি সরবরাহ ফুরিয়ে যাওয়ায় কিছু পেট্রোল স্টেশনে দিনভর দীর্ঘ লাইন ছিল।
‘এটি এমন এক দৃশ্য যা আমি দীর্ঘ কয়েক দশকে আগেও দেখেছি,’ বেইট সাহুর শহরের এক ট্যুর গাইড এ কথা বলেন, যিনি বর্তমানে কর্মহীন।
‘নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ডের জন্য ইসরাইল সবসময় এমন সব নীতি গ্রহণ করে যার কারণে সব মানুষ শাস্তি পায়,’ অন্য বাসিন্দারা অভিযোগ করেন।
রোববার, হামাস দ্বারা শাসিত গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের সামরিক অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় একটি ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। যার ধারাবাহিকতায় পশ্চিমতীরের দোকান এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ করে দেয়া হয়।
সন্ধ্যায় বিক্ষুব্ধ আন্দোলন হয়। গত রাতে রামাল্লার কালান্দিয়া চেকপয়েন্টে ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে চার ফিলিস্তিনি নিহত হন।
সূত্র : আলজাজিরা, বিবিসি