অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের ২ মামলায় গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারকে ২২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া বাকি ১৩ আসামিকে ৭ বছর করে সাজার আদেশ দেয়া হয়েছে।
রোববার (৮ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে সকালে পি কে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা বড়াল, অনিন্দিতা মৃধা, নিকটাত্মীয় শংখ বেপারী ও সুকুমার মৃধাকে আদালতে হাজির করা হয়।
গত বুধবার (৪ অক্টোবর) আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আজ রোববার রায়ের দিন ধার্য করেছিলেন বিচারক।
পি কে হালদার ভারতের কলকাতায় গ্রেফতার হলেও বাংলাদেশের আদালতে তাকে পলাতক দেখানো হয়। মামলার অন্য পলাতক আসামিরা হলেন- লিলাবতী হালদার (পি কে হালদারের মা), পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, অমিতাভ অধিকারী, প্রিতিশ কুমার হালদার, রাজিব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায় ও স্বপন কুমার মিস্ত্রি। এ মামলায় ১০৬ সাক্ষীর মধ্যে ৯৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।
২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী। মামলার এজাহারে বলা হয়, পি কে হালদার বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ নিজ দখলে রেখেছেন। এছাড়া ওই অর্থ আড়াল করতে বিদেশে পাচার করে মানি লন্ডারিং আইনেও অপরাধ করেন তিনি।
মামলাটি তদন্ত শেষে ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন। ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
কলকাতার অদূরের উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় অভিযান চালিয়ে গত বছরের ১৪ মে পি কে হালদারকে গ্রেফতার করে ইডি। অভিযানে আরও গ্রেফতার করা হয় তার ভাই প্রাণেশ হালদার, দুই ভাগ্নে স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, সহযোগী ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং পি কে হালদারের কথিত বান্ধবী আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারকে।
গত বছরের ১৫ জুলাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কলকাতার আদালতে চার্জশিট জমা দেয় ইডি। অর্থ পাচার সংক্রান্ত আইন-২০০২ এবং দুর্নীতি দমন আইন-১৯৮৮ এর মামলায় ওই ছয় অভিযুক্তের নামে চার্জ গঠন করা হয়। বর্তমানে অভিযুক্ত পি কে হালদারসহ পাঁচ পুরুষ অভিযুক্ত রয়েছেন প্রেসিডেন্সি কারাগারে। আর একমাত্র নারী অভিযুক্ত রয়েছেন আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে।