গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ভিসা নীতি প্রয়োগ নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্যে হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ১৯০ জন বিশিষ্ট নাগরিক। তারা বলেছেন, এই পদক্ষেপ গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মূল নীতির সাথে সাংঘর্ষিক।
গতকাল শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রদূতকে লেখা এক চিঠিতে সম্পাদকরা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘মিডিয়ার ক্ষেত্রে এটি কিভাবে ব্যবহার করা হবে?’ এবং ‘কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করা হচ্ছে?’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রদূত তার উত্তর পর্বে প্রশ্নের কোনো বিস্তারিত উত্তর দেয়া থেকে বিরত ছিলেন। তবে গণমাধ্যমকে ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় আনার বিষয়ে তার অবস্থানকে সমর্থন করেছেন, যা আমাদের হতবাক করেছে।’
এতে আরো বলা হয়, ‘গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে হাসের মন্তব্যকে উগ্রপন্থী সংগঠন ও স্বাধীনতাবিরোধী মহল মহিমান্বিত করেছে, যারা প্রকাশ্যে পশ্চিমা মূল্যবোধের নিন্দা করে, মুক্তচিন্তাবিদদের ইসলামের শত্রু বলে মনে করে এবং ১৯৭১ সালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত যুদ্ধাপরাধীদের দায়মুক্তির নিশ্চয়তা দেয়।’
বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ভিসা নীতিতে গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ করা থেকে বিরত থাকলেও হাস তার বক্তব্য প্রত্যাহার করেননি।
এতে বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাজাপ্রাপ্ত ও আত্মস্বীকৃত খুনিকে ক্রমাগত আশ্রয় দেয়ায় ন্যায়বিচার সমুন্নত রাখার অঙ্গীকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকারের কোনো মিল নেই।
বিবৃতিতে লেখক, অধিকারকর্মী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাপরাধবিরোধী প্রচারক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ মোট ১৯০ জন বিশিষ্ট নাগরিক সই করেছেন।
এদের মধ্যে রয়েছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী রানা দাশগুপ্ত, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ ও রামেন্দু মজুমদার, শহীদজায়া শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শহীদজায়া সালমা হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ক্যাপ্টেন (অব.) আলমগীর সাত্তার বীর প্রতীক, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসক নূরন নবী, অধ্যাপক শিল্পী আবুল বারক আলভী, অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, চিকিৎসক শেখ বাহারুল আলম, চিকিৎসক ইকবাল কবীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাজকর্মী সুব্রত চক্রবর্ত্তী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূতত্ত্ববিদ মকবুল-ই এলাহী চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল গাফ্ফার, কবি জয়দুল হোসেন, সমাজকর্মী কাজী লুৎফর রহমান, সমাজকর্মী কামরুননেসা মান্নান, আইনজীবী আজাহার উল্লাহ্ ভূঁইয়া, নির্মল রোজারিও, ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়সহ ১৯০ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
সূত্র : ইউএনবি