অতি ভারি বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্রীজ সংলগ্ন কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড।
নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ায় বন্যার আশংকায় দিন কাটাচ্ছেন নদী পাড়ের মানুষ। রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরে তাসনিম তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি এবং বন্যা ও ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি অর্ধশতাধিক পরিবারের মাঝে শুকনা খাবার হিসেবে চিড়া-মুড়ি, গুড় বিতরণ করেছেন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী পাড়ের নিম্নাঞ্চল ও নিম্ন চরাঞ্চলগুলোতে বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এরমধ্যে ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চর খিতাবখাঁ, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চর বিদ্যানন্দ, চর পাড়ামৌলা, চর তৈয়ব খাঁ তিস্তা নদীর পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
এদিকে নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াসাম, চর খিতাবখা, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুরা, রামহরি ও কালিরহাট এলাকায় দেখা দিয়েছে তিস্তা নদী ভাঙন।
তিস্তা পাড়ের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য হিরা বলেন, তিস্তা নদীর পানি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তিস্তার তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে তো অনেকে বাড়ি ঘর জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে অনেক মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে।
রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরে তাসনিম বলেন, তিস্তার পানি বাড়ছে। মাঝের চরে পানি উঠতেছে। খিতাবখাঁ, গতিয়াসাম এবং সরিষাবাড়ি এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। খিতাব খাঁ প্রাইমারি স্কুলটি হুমকির মুখে রয়েছে। তাৎক্ষনিকভাবে অর্ধশতাধিক পরিবারের মাঝে শুকনা খবার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে ৬টন চাল বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কয়েক দিনের বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তার পানি আবারও বিপদৎসীমা ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী চব্বিশ ঘণ্টায় আরও অবনতি হওয়ার আশংকা রয়েছে।