বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে পত্রিকায় লিখেছে, আমার মতো জঘন্য মিথ্যাবাদী নাকি আর নাই। আমি নাম বলতে চাই না। আমরা তো রাজনৈতিক রুচিশীলতার মধ্য দিয়ে বড় হয়েছি। তারা (আওয়ামী লীগ নেতারা) যে ভাষায় কথা বলে, আমরা তো সেই ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত নই। ওনারা নাম ধরে গালিগালাজ করেন।’
আজ বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) স্বাধীনতা হলে গণঅধিকার পরিষদের একাংশ আয়োজিত ‘নাগরিকদের সাংবিধানিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এ দেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সব স্বপ্নকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এ থেকে মুক্তি পেতে গণতন্ত্রকামী সব দল এক হয়েছে। এখন সব মানুষকে এক করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে এমন কিছু নেই যেখানে আওয়ামী লীগ হাত দেয় নাই। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দখলের অভিযোগ, ব্যাংক খালি, লুটপাট করে জাতিকে পুরোপুরিভাবে দুর্নীতিপরায়ণ জাতি হিসেবে পরিণত করছে।’
তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগে এক স্কুলছাত্রের কাছে জানতে চাইলাম তুমি বড় হয়ে কি হবে? সে বলল, ‘‘রাজনীতিবিদ হতে চাই’’। উত্তর শুনে অবাক হয়ে বললাম কেন? বাচ্চাটি বলেল, ‘‘রাজনীতিবিদ হলে অনেক টাকার মালিক হওয়া যায়’’। আসলে সেই বাচ্চাটির কোনো দোষ নেই। সে দেখেছে ক্ষমতাসীনরা কীভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছে। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। আর পরিবর্তন আসবে তরুণদের মাধ্যমে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের সব কর্মকাণ্ডই দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে। আজ এক ব্যক্তির কারণে সংবিধান কাটাছেঁড়া করা হয়েছে। আজকে তারা সমাজকে নষ্ট করে ফেলেছে। আওয়ামী লীগ নিজেদের দেশের মালিক মনে করে অথবা এক ব্যক্তি ও পরিবারের মনে করে। এ থেকে বাঁচতে হলে প্রয়োজন বড় ধরনের একটি ঝাঁকি ও সংগ্রাম। একটি সুনামির মতো বড় অভ্যুত্থান ছাড়া এদের সরানো সম্ভব না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। যখন এই দাবিতে ১৭৩ দিন হরতাল দিয়েছেন, গান পাউডার দিয়ে ১১ জন পুড়িয়ে মেরেছেন, তখন কোথায় ছিল সংবিধান?’
তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যখন দেখি নারী লাঞ্ছিত হচ্ছে শিক্ষাঙ্গণে ছাত্রী লাঞ্ছিত হচ্ছে তখন ছাত্ররা রাজপথে নামে না, তরুণরা প্রতিবাদী হয় না, তখন কষ্ট পাই। অথচ, পাকিস্তান শাসনামলে সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অগ্রণী ভুমিকা রেখেছে এই ছাত্ররা, তরুণরা। দুর্ভাগ্য আজকে সে তরুণ ও ছাত্রদের দেখতে পাচ্ছি না।’
গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুরের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহীম, এবি পার্টির আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, সমমনা জোটের প্রধান সমন্বয়ক ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় পার্টির একাংশের মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনডিপি চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহের, জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল লতিফ মাসুম প্রমুখ।