প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাবা বারবার জেলে গেছেন, আন্দোলন-সংগ্রাম কত কিছু কিন্তু মাকে কখনো হতাশ হতে দেখিনি। এই যে চড়াই-উৎরাই মায়ের জীবনে, তাকে কিন্তু কখনো ভেঙে পড়তে দেখিনি।’
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন’ ও ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক প্রদান’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি পদক বিতরণ করেন এবং আর্থিক অনুদান ও সেলাই মেশিন বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দলের ভেতরে সমস্যা দেখা দেয়। মওলানা ভাসানী দল ছেড়ে চলে যান। তখন দলের দায়িত্ব নেওয়া জন্য আমার বাবা মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেন। আম্মা এ ব্যাপারে কোনো দিন অভিযোগ-অনুযোগ করেননি। তিনি হাসিমুখে মেনে নিয়েছেন। সব সময় স্বামীর পাশে থাকতেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাবার রাজনৈতিক জীবনে জেল-জুলুম, সংকট নিয়ে আমাদের মায়ের কোনো অভিযোগ ছিল না। সবসময় পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আগস্ট মাস আমাদের শোকের মাস, কিন্তু এই মাসেই জন্ম নিয়েছেন বঙ্গমাতা। তার জন্মদিনটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেই জন্মদিনটা উদযাপন করছি, কিন্তু এক বুক ব্যথা-যন্ত্রণা নিয়ে।’
উল্লেখ্য, এ বছর রাজনীতিতে এক জন; শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে দুই জন এবং গবেষণায় এক জন মোট চার জন বিশিষ্ট নারী ও বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলকে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক ২০২৩’ প্রদান করা হয়।
‘রাজনীতি’ ক্ষেত্রে অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন (মরণোত্তর), শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে অণিমা মুক্তি গমেজ ও মোছা. নাছিমা জামান ববি, গবেষণায় ড. সেঁজুতি সাহা এবং বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলকে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক-২০২৩’ দেওয়া হয়েছে।
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেরণাদাত্রী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য সহধর্মিণী, সহকর্মী, সহযোদ্ধা এবং জীবনের চালিকাশক্তি। মহীয়সী এই নারী নিজেকে শুধু স্বামী, সন্তান, সংসার ও আত্মীয়-স্বজনের প্রতি নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেননি, তিনি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে সর্বক্ষণের সহযোগী ও অনুপ্রেরণাদাত্রী হয়ে নিভৃতে কাজ করে গেছেন।