মাসুদ রানা সরকার, বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক হারে দেখা দিয়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ(এলএসডি)। এতে করে গরুর খামারী ও কৃষকরা দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছে।
গত ৩ জুলাই, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে গিয়ে পৌর এলাকার বেড়াবলা গ্রামের আলম মিয়ার সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, গত কয়েক দিন যাবৎ তার একটি গরুর লাম্পি স্কিন রোগ হয়েছে এবং এলাকার আরো অনেক খামারী ও কৃষকের গরুর এ রোগ দিয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে এসেছেন। চিকিৎসকরা গরুর চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান করেন তার জন্য তিনি এসেছেন।
পৌর এলাকার বেড়াবালা গ্রামের কৃষক রিপন মিয়ে বলেন, আমার ৯ মাসের একটি গরুর লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আমি স্থানীয় দোকান থেকে ঔষুধ ক্রয় করে গরুকে খাওয়ানোর পরে অসুখ ভালো না হওয়ায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে এসেছি। এখানে গরুর চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছি। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্ত সিরাজুল ইসলাম জানান, গরুর লাম্পি স্কিন ভাইরাসজনিত রোগ। বর্তমান সময়ে তাপদাহের কারণে অধিক তাপমাত্রা ও মশা-মাছি গরুর এটেল থেকে এ রোগের বিস্তার লাভ করে থাকে। এখন পর্যন্ত এ রোগের কোনো প্রতিষেক আবিষ্কৃত হয়নি। তবে বর্তমানে তাপদহ কিছুটা কমায় এর প্রখব কমে এসেছে। সরকারি ভাবে খামারী ও কৃষকদের মাঠ সর্বক্ষণিক সুপরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত ভ্যাকসিন প্রদান করাহচ্ছে। গরুর শরীরে প্রথমে জ্বর দেখা দেয় এবং খাবারের রুচি কমে যায়। জ্বর বেশি হলে নাক-মুখ দিয়ে লাল বের হয়, পা ও গলা ফুলে যায়। আক্রান্ত গরুর বুকের নিচে দুই পায়ে মাঝে পানি জমে। গরুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে চামড়ায় গুটি গুটি ক্ষত হয় এবং পচন ধরে । সেই সঙ্গে চামড়া থেকে লোম উঠে যায়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নেওয়া শুরু করলে এ রোগে আক্রান্ত পশু সুস্থ হতে প্রায় এক মাস সময় লাগে। এ রোগ থেকে অতি দ্রুত বিস্তার রোধ কল্পে গরুকে মশারির মধ্যে রাখতে হবে এবং গোয়াল ঘর ধৌত করে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। গত এক মাসে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ২৯টি গরুর লাম্পি স্কিন রোগের চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছেন এবং ৩৮০টি গরুকে সরকারি ভাবে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে আমরা প্রতিটি খামারী ও কৃষককে এ রোগ প্রতিকার সম্পর্কে সুপরামর্শ প্রদান করে আসছি এবং এ রোগ থেকে সচেতন হওয়ার জন্য বিভিন্ন বন্দরে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।