জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় পলাতক তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে মামলার রায় আজ বুধবার বিকেল ৩টায় ঘোষণা করা হবে। ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করবেন। ওই আদালতের অতিরিক্ত পিপি তাপস কুমার পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে তারেক-জোবায়দার রায় ঘিরে আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সকাল থেকেই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার তদারকি অফিসার পুলিশ পরিদর্শক ফারুকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ‘আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রায় ঘিরে যেকোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে।’
এর আগে গত ২৭ জুলাই মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়। রাষ্ট্রপক্ষে দুর্নীতি দমন কমিশনের বিশেষ বিপি মোশারফ হোসেন কাজল শুনানি শেষ করেন। এরপর আদালত রায়ের জন্য আজকের তারিখ ধার্য করেন।
বিশেষ পিপি মোশারফ হোসেন কাজল যুক্তিতর্ক শুনানিতে দাবি করেন, জোবাইদা রহমান ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীগণ অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন। তাই দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে দুই আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করেন পিপি।
মামলার আসামি তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমান বিদেশে অবস্থান করছেন। তারা বিচারের মুখোমুখি না হওয়ায় তাদের হয়ে আইনজীবীরা এ মামলায় লড়তে পারেননি।
উল্লেখ্য, এই মামলায় অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। আর সম্পদের তথ্য অর্জন ও গোপনে সহযোগিতা করার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
গত ২১ মে মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক ড. মো. জহিরুল হুদার সাক্ষ্যের মধ্য দিয়ে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। গত ২৪ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক তৌফিকুল ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে তা সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, জ্ঞাত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জোবায়দা রহমান ও তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। তবে তারেক রহমানের শাশুড়ি মারা যাওয়ায় এই মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।