কথায় আছে, কারো পৌষ মাস তো কারো সর্বনাশ। ভারতের সবজির যা দাম তাতে বাজারে পুরোদস্তুর আগুন লেগেছে যেন। তার মধ্যে টমেটোর কথা যত কম বলা যায় ততই ভালো। দামের কারণে টমেটো খাওয়াই তুলে দিতে হয়েছে। এ হাল শুধু যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে তাও নয়। ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে এমনটাই হাল। কিন্তু হলে কী হবে! সবার সর্বনাশ তো আর নয়, কারো কারো পৌষমাসও বটে! সম্প্রতি এই ‘সোনা’র মতো দামি টমেটো বেচেই কোটি টাকা আয় করলেন অন্ধ্রপ্রদেশের এক চাষি। অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুর জেলার বাসিন্দা মুরালির এই বিপুল লাভের অঙ্কই সম্প্রতি খবরের শিরোনামে এসেছে।
বছর আটচল্লিশের মুরালি মাত্র দেড় মাস অর্থাৎ ৪৫ দিনের মধ্যেই চার কোটি রুপি (বাংলাদেশী মুদ্রায় সোয়া পাঁচ কোটি টাকার বেশি) কামিয়েছেন। তাও শুধুমাত্র টমেটো বেচেই। কারকামান্ডা গ্রামে একটি যৌথ পরিবারে বাস মুরালির। সেখানে তার ১২ একর জমিও রয়েছে। কিছু বছর আগে তিনি আরো ১০ একর জমি কিনেছেন। সম্প্রতি টমেটোর দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপুল অঙ্কের লাভ হয় তার। তবে এর জন্য কিছুটা কাঠখড়ও পোড়াতে হয় তাকে।
স্থানীয় হাটে টমেটো বেচেননি তিনি। ১৩০ কিমি দূরে এপিএমসি ইয়ার্ডে গিয়ে টমেটো বেচে আসেন মুরালি। আর তার বিনিময়েই এই বিপুল অঙ্ক সোজা চলে আসে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। বরাবরই সবজি চাষের সাথে যুক্ত মুরালি। ৪৮ বছরের জীবনে অনেক ওঠাপড়ার সম্মুখীনও হতে হয়েছে তাকে। একটা সময় আলমারিতে জমা রাখা ৫০ হাজার টাকাই ছিল তাদের বড় সম্পদ। সেখান থেকে আজ কয়েক দিনের মধ্যে চার কোটি রুপি আয় করতে পেরে রীতিমতো খুশি তিনি।
এই দিন সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানান, তার গত বছরের দুর্দশার কথা। সবসময় যে তার জীবনে এমনই পৌষমাস এসেছে, তা নয়। মুরালি বলেন, গত বছর জুলাই নাগাদ বিপুল ক্ষতির ধাক্কা সামলাতে হয়। গত বছর টমেটোর দাম অনেকটাই পড়ে গিয়েছিল। এর ফলে বাজার থেকে ঠিক দাম পাননি। এই দিকে বিশাল পরিমাণ সার, বীজের দামও ওঠেনি। মুরালির কথায়, গত বছর প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয় তার। সে বড় দুঃসময় ছিল বলেই জানাচ্ছেন তিনি। তবে চলতি বছরে সেই ক্ষতি অবশ্য পুষিয়ে গিয়েছে বলেই জানান মুরালি।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস