ফজরের নামাজের পর থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আসতে শুরু করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন। বেলা ২টা থেকে মহাসমাবেশ শুরু হওয়ার কথা। তবে সমাবেশ শুরুর চার ঘণ্টা আগেই বিএনপির নেতাকর্মীতে ভরে গেছে সমাবেশস্থল।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহাজাহান নোয়াখালী জেলা বিএনপির মিছিলে নেতৃত্ব দেন। তিনি জানান, স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ মহাসমাবেশে যোগ দিচ্ছেন।
ঢাকা জেলা বিএনপির আরেকটা মিছিল আসে বেলা ১১টার দিকে। তারা অবস্থান নেন সেগুনবাগিচায়। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আহ্বানে আজকের এই মহাসমাবেশ হবে স্মরণকালের। এখান থেকে যে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে তা সফল করার জন্যও নেতাকর্মীরা প্রস্তুত।
সাদা, নীল, লাল, সবুজ ও হলুদ টুপি মাথায় নেতাকর্মীরা মহাসমাবেশে আসছে । ৯টি বড় ট্রাকের দুইপাশের ডালা খুলে একটির সঙ্গে আরেকটি একত্রিত করে তৈরি করা হয়েছে মহাসমাবেশের অস্থায়ী মঞ্চ। বিছানো হয়েছে লাল কার্পেট। উত্তরমুখী এই মঞ্চে নেতাদের জন্য রয়েছে শতাধিক চেয়ার। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য রাখা হয়েছে দুটি আলাদা চেয়ার। ফাঁকা রেখে এই মহাসমাবেশ হবে। মঞ্চের এক পাশে রয়েছে বিশাল আকারের ডিসপ্লে বোর্ড। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বেঁধে দেওয়া সীমানায় ফকিরাপুল, পল্টন, কাকরাইলসহ আশপাশে লাগানো হয়েছে দেড় শতাধিক মাইক।
গণমাধ্যম এবং সংস্কৃতিকর্মীদের জন্য দুটি বড় ট্রাক একত্রিত করে তৈরি করা হয়েছে আলাদা দুটি মঞ্চ। এই মঞ্চ থেকে জাসাস শিল্পীরা গান পরিবেশনের মধ্যদিয়ে নেতাকর্মীদের মাতিয়ে রাখছেন।
দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই মহাসমাবেশ কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ‘এক দফা’দাবিতে বিএনপিসহ সমমনা জোট ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সমাবেশ করছে। গত ১২ জুলাই শুরু হওয়া এক দফা আন্দোলনের এটি দ্বিতীয় কর্মসূচি। এর আগে তারা ১৮ ও ১৯ জুলাই সারাদেশে মহানগর ও জেলায় পদযাত্রা করেছে।
মানুষের চাপ বাড়তে থাকায় সকাল থেকে নয়া পল্টনের দুই পাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা থেকে আসা যুবদল নেতা আখতারুল ইসলাম, মো. মহসীন ও সুমন বলেন, ‘নানা বাধা মোকাবিলা করে ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে উপস্থিত হয়েছি। আমরা অবিলম্বে এই আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ চাই।’
গত ১২ জুলাই বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলো যুগপৎ আন্দোলনের এক দফার ঘোষণা দেয়। এই এক দফার মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরসহ নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠান।