ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের চার ফর্মুলা দিলেন তাবিথ-ইশরাক

Slider বাংলার মুখোমুখি


রাজধানীর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চার দফা দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মনোনীত সাবেক দুই মেয়র পদপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল এবং ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান তারা।

এসময় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দুর্নীতি ও অবহেলার পথ পরিহার করে দক্ষতার রাস্তা সামনে এনে জনগণের স্বার্থে কাজ করার আহ্বান জানান তারা।

এই যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তাবিদ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন চার দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তা হলো- ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের রক্ত ডোনেট করা, জনসচেতনার জন্য প্রচারণা, সরকারি স্থাপনায় ডেঙ্গুর লার্ভা খুঁজে বের করে ধ্বংসের উদ্যোগ, জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া।

এই কর্মসূচি সম্পর্কে তাবিথ বলেন, ‘আমরা ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্ত দেব, অন্যদের রক্ত দিতে উৎসাহীত করব। এ সংক্রান্ত একটি তথ্য সেল গঠন করা হবে এবং সরকারি স্থাপনাগুলো পরিষ্কার করব।’

চলতি বছরে ২১ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে উল্লেখ করে তাবিথ বলেন, ‘গতবারের তুলনায় এবার ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। এ অবস্থা চলমান থাকলে ডেঙ্গু আক্রান্ত সংখ্যা এমন জায়গায় গিয়ে ঠেকবে, সেই জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিতে হাসপাতাল ও ঔষধপত্র সরবাহ করা যাবে না। এই অবস্থায় আমরা সংশ্লিষ্ট মহলের সবাইকে আহ্বান জানাই দুর্নীতি ও অবহেলার পথ পরিহার করে দক্ষতার রাস্তা সামনে এনে জনগণের স্বার্থে আসুন আমরা কাজ করি। এ কাজগুলো করার দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে সিটি করপোরেশনের। এটা তাদের ম্যান্ডেটের মধ্যে পড়ে।’

তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষকে জরিমানা করার সময় আইনের অপেক্ষায় থাকে না। কিন্তু যখনই দায়িত্ব নেওয়ার পালা হয় তখন একে অপরের ওপর দোষ চাপিয়ে দেয়।’

সংবাদ সম্মেলনে তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘আমরা আবারও একটা বিশেষ মহামারি ডেঙ্গুর দিকে ধাবিত হচ্ছি। ঢাকাসহ সারাদেশে এডিসসহ বিভিন্ন মশা থেকে যে রোগগুলি ছড়িয়ে পড়ে, এগুলো নিয়ে আমরা সবাই সচেতন ছিলাম। আমরা সব সময় এ নিয়ে সতর্ক করেছি। কিন্তু আমাদের বা জনগণের কোনো সতর্কতা ডিজি হেলথ’র কানে পৌঁছায়নি। বরং আমরা দেখছি দুর্নীতি চলমান রয়েছে, অবহেলা ও অদক্ষতা চলমান রয়েছে। যার কারণে ডেঙ্গু মশা নিয়ে আমরা খুবই সমস্যার মুখে দাঁড়িয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে করণীয় হচ্ছে গোটা নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখা। যেখানে এডিস লার্ভা জন্ম নিতে পারে, সেই স্থানগুলো পরিষ্কার করার মাধ্যমে তার আবাসস্থল নষ্ট করে দেওয়া। আমরা দেখছি সেই কাজগুলো হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘অনেক তামাশা দেখেছি। হাঁস-মাছ ছাড়া হয়েছে বিভিন্ন লেকে, লোক দেখানোর জন্য কিছু গাছ কাটা হয়েছে। অথচ আমরা জানি অন্ধকার ও বদ্ধ পানিতে এই লার্ভাগুলো পাওয়া যায়। সেজন্য উপযুক্ত জায়গা হচ্ছে সরকারি অফিস ও সরকারি কারখানাগুলো। সেই জায়গাগুলোতে কখনো জরিমানা করতে দেখি না। সব দেখছি সাধারণ মানুষের বেলায়। তাদের মাথার ওপর জরিমানার বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা জনবিরোধী, এতে ভালো ফলাফল বয়ে আনবে না।’

ইশরাক হোসেন বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রনে জনগণকে সচেতন করতে আমরা প্রচারপত্র বিলিসহ নানা কার্যক্রম হাতে নেব।’

লার্ভা খুঁজতে ড্রোন ওড়ানোর মত উদ্ভট উদ্ভট কাজ করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার জন্য বিশেষ কোনো হাসপাতালের ব্যবস্থা করা হয়নি। এমনকি প্রচলিত চিকিৎসা যেখানে নেয়া হয় সেখানেও বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘লার্ভা নিধনে কীটনাশক কিনতে সীমাহীন দুর্নীতি করে সেখানে কেরোসিন মেশানো হচ্ছে। তাতে কার্যকর কোন ফলাফল আসছে না।’

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহম্মেদ রবিন, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ড্যাবের সভাপতি ডা. হারুণ আল রশিদ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *