সরকারের পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবি আদায়ে রাজধানীতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো পদযাত্রা শুরু করেছে বিএনপি। আজ বুধবার আব্দুল্লাহপুরের পলওয়েল মার্কেটের সামনে থেকে পদযাত্রা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
পদযাত্রা পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছর আপনাদের অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছে বিএনপি। আর সহ্য করব না। দেশের জনগণ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা জেল খাটতে শিখেছে, মৃত্যুবরণ করতে শিখেছে। মিছিল করতে শিখেছে, রৌদ্রের তাপ সহ্য করতে শিখেছে। আপনাদের অত্যাচার আর সহ্য করব না। এখন থেকে অত্যাচারের জবাব দেব। সব বাধা অতিক্রম করে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে বিএনপি।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘গতকাল লক্ষ্মীপুরে আমাদের লোক মেরেছেন। আপনারা শান্তি মিছিলের নামে অশান্তি তৈরি করছেন। বিএনপির মিছিল মিটিংয়ে কোনো রকম ঝামেলা হয় না। আমাদের পদযাত্রা শান্তিপূর্ণ।’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আপনারা ঝামেলা তৈরি করতে চান কেন? আমরা যদি মিছিল মিটিং করি, আপনারা করেন। আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে দিন।’
গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির পদযাত্রায় আওয়ামী লীগ পুলিশ হামলা করে বহু নেতাকর্মীকে আহত ও একজনকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘আপনারা বাঙলা কলেজ থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করবেন, আমরা ছেড়ে দেব না। ছেড়ে দেওয়ার দিন শেষ, সেই দিন শেষ। খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ। আর কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না। আমাদের অধিকারকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। এই বাংলাদেশ কারও করদরাজ্য নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংবিধানের বাইরে এক চুলও নড়বেন না। খুব ভালো কথা কাদের সাহেব, আপনার কথায় আপনি স্থির থাকেন। আমরাও বলি সংবিধানের বাইরে এক পাও দেব না। কোন সংবিধান? খায়রুলের সংবিধান নাকি বাংলাদেশের সংবিধান। আমরা চাই অখণ্ড সংবিধান, যে সংবিধানে এক চুলও কাটাছেঁড়া করা হয়নি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যে সংবিধান থেকে বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করা হয়েছে, ওই সংবিধান আমরা চাই না। আমরা চাই যে সংবিধানে ছিল, যেখানে কাটাকাটি ছিল না, অপারেশন ছিল না, পোস্টমডেম ছিল না। বাংলাদেশের জনগণ যে সংবিধান তৈরি করেছিল, সেই সংবিধানের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব। এ ছাড়া আপনাদের তৈরি, খাইরুল হকের তৈরি ওই সংবিধানের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব না।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির জয়নাল আবেদীন ফারুক, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, রকিবুল ইসলাম বকুল, আমিরুল ইসলাম আলীম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বুধবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে কয়েক হাজার নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে পদযাত্রা শুরু হয়। এতে মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ -সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নিয়েছেন। সকাল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা পলওয়েল মার্কেটের সামনে জড়ো হয়।
আব্দুল্লাহপুর-বিমানবন্দর-কুড়িল বিশ্বরোড-নতুন বাজার-বাড্ডা-রামপুরা ব্রিজ-আবুল হোটেল-খিলগাঁও-বাসাবো-মুগদাপাড়া-সায়েদাবাদ হয়ে যাত্রাবাড়ী (চৌরাস্তা) পর্যন্ত হবে এ পদযাত্রা। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আব্দুল্লাহপুর থেকে শুরু করেছে। রামপুরা ব্রিজে যুক্ত হবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।