লক্ষ্মীপুরে বিএনপির পদযাত্রা ও আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় এ সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষে সজীব নামের একজন নিহত হন। এছাড়া পুলিশ,পথচারীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
সজিব সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য বলে বিএনপি দাবি করেছেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি দোকান ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। আহতরা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কর্মসূচি পালন করার জন্য খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে সমবেত হতে শুরু করেন। বিকেল ৪টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক এ্যানি চৌধুরীর নেতৃত্বে শহরের গোডাউন রোড থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। এ সময় শহরের সামাদ একাডেমির মোড়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ব্যানার-ফেস্টুন ছেঁড়া শুরু করেন বিএনপিকর্মীরা। এর মধ্যে বিএনপির ৩০/৪০ জন নেতাকর্মী হঠাৎ কলেজ রোডের দিক থেকে আসা আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে অংশ নেওয়া ১৫/২০ জনকে ধাওয়া করে। এ সময় দুটি অটোরিকশা ও একটি একুরিয়ামের দোকান ভাঙচুর করে তারা। এতে দোকানী ও পথচারীসহ পাঁচজন আহত হন। এ সময় গুরুতর আহত এক যুবক মদিন উল্যাহ হাউসের দ্বিতীয় তলায় আশ্রয়ের জন্য দৌড়ে গিয়ে লুটিয়ে পড়েন। এর কিছুক্ষণ পর প্রচুর রক্তক্ষরণে ওই যুবক মারা যায় বলে জানান বাড়ির মালিক।
এদিকে বিএনপির মিছিলটি ঝুমুর এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া করে। একইভাবে শহরের বাগবাড়ি এলাকায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এদিকে ঝুমুর এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে মহাসড়কে উঠতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে তারা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি, টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হন।
লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ জানান, বিএনপি মিছিল নিয়ে নাশকতার জন্য মহাসড়কে উঠতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। তখন তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। বিএনপির হামলায় সদর থানার ওসি মোসলেহ উদ্দিন, সদর সার্কেল সোহেল রানাসহ পুলিশের ১০ সদস্য আহত হন।