টঙ্গী: ঈদুল আযহার আগে ২৫ জুন টঙ্গীতে প্রিন্স জ্যাকার্ড সোয়েটার লিমিটেড’ কারখানায় শ্রমিকদের বকেয়া বেতন আদায়ে কাজ করতে গিয়ে নিহত শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলাম শহিদ হত্যাকান্ডে গ্রেপ্তার হয়েছেন নয় আসামী। রিমান্ডে নেয়ার পর আসামীদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যার ঘটনায় পেছন থেকে কোন ইন্ধন রয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। এই ধারণা থেকেই ইন্ধন দাতাকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা পুলিশের।
মঙ্গলবার(১৮ জুলাই) এই হত্যা মামলা সংশ্লিষ্ট তদন্ত টিমের বিভিন্ন সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় এই পর্যন্ত ৯আসামী গ্রেপ্তার হয়েছে। সোমবার গাজীপুর আদালতে মামলার এজাহারভূক্ত আসামী মো: সোহেল উরফে রিপন আত্মসমর্পন করেন। এই খবর পেয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামীর দশ মিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এই মামলায় গ্রেপ্তার বাকী আট আসামী হল, মাজহারুল ইসলাম(৩৫), রাসেল (৩২), আকাশ উরফে বাবুল(৪৩), রাইসুল ইসলাম উরফে রাতুল(১৯), জুলাহাস আলী(২৩),সোহেল হাসান উরফে সোহাগ(২৩), শাহীনুর ইসলাম(২১) ও মো: হানিফ(৫০)। এদের মধ্যে চার
আসামী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী দিয়ে হত্যার অপরাধ স্বীকার করেছেন।
মামলার তদন্ত দলের প্রধান গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: ইমরান আহম্মেদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, আসামীদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তথ্য যাচাই বাছাই করে আমরা ইতোমধ্যে হত্যাকান্ডে কারা জড়িত ও হত্যাকান্ডের কারণ শনাক্ত করতে পেরেছি। এই ঘটনার পেছনে কোন ইন্ধন ছিল কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই হত্যা মামলায় ইন্ধন দাতাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
পুলিশ, মামলা বাদীপক্ষ ও স্থানীয় একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, টঙ্গীতে স্থানীয় শ্রমিক নেতাদের জায়গায় গাজীপুর থেকে শ্রমিক নেতা শহিদুল কাজ করতে যাওয়ায় সাংগঠনিক বিরোধ দেখা দেয়। টঙ্গীতে শ্রমিক নেতাদের প্রভাব ও আধিপত্য ধরে রাখতে এই হত্যাকান্ড হয়ে থাকতে পারে। আর এই আধিপত্য বিস্তারে বড় কোন নেতার ইন্ধন থাকতে পারে বলে ধারণা পুলিশের।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি শহিদুল ইসলাম গত ২৫ জুন টঙ্গীর সাতাইশে প্রিন্স জ্যাকার্ড সোয়েটার লিমিটেড’ কারখানায় বকেয়া বেতন আদায়ের জন্য আন্দোলনরত শ্রমিকদের পক্ষে ভূমিকা রাখতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন। শহিদুলের বাড়ি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের মিঠালু গ্রাামে। এই ঘটনায় বাংলাদেশ গার্মেন্ট এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিয়াল শ্রমি ফেডারেশনের সভাপতি কল্পনা আক্তার বাদী হয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় ৬জনের নাে শনাক্ত করে ও অজ্ঞাত নামা আসামী উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার সাথে সাথে এক আসামী গ্রেপ্তার হয়। পরবর্তি সময় মামলাটি টঙ্গী পশ্চিম থানা থেকে শিল্প পুলিশে স্থানান্তর করা হয়। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-২ গাজীপুর মামলার তদন্তভার পেয়ে মামলাটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে মামলার তদারক কমিটি গঠন করে। এই কমিটির সভাপতি হলেন শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইমরান আহম্মেদ পিপিএম।