টি-টোয়েন্টি সিরিজে নিচ ও ধীরগতির উইকেটে দাপট দেখিয়েছে ভারত ও বাংলাদেশের স্পিনাররা। কোনো ইনিংসেই পেরোয়নি ১২০ রান। ওয়ানডে সিরিজের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে এই নিচ ও ধীর উইকেটে অল্প রানের শঙ্কা করেছিলেন ভারতের অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর। এদিন অল্প রানের ম্যাচই হয়েছে, তবে দাপট দেখিয়েছেন পেসাররা।
প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১৫২ রানের পুঁজি গড়ে ভারত। যার জবাব দিতে নেমে ১১৩ রানেই গুটিয়ে যায় ভারত। ৭ ওভারে ২৯ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ভারতকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন ১৮ বছরের পেসার মারুফা আক্তার।
ডিএলএস মেথডে ৪৪ ওভারের মধ্যে বাংলাদেশের দেওয়া ১৫৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুর দিকেই মারুফার তোপে পড়ে ভারত। ১৩ রানের মাথায় স্মৃতি মান্ধানাকে ফেরানোর পর ৩০ রানে ফেরান প্রিয়া পুনিয়াকে। প্রথম স্পেলে এই দুই উইকেটই পান মারুফা। ৩৭ রানের মাথায় অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরকে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন নাহিদা আক্তার। ৪৪ রানে স্বস্তিকা ভাটিয়াকে ফেরান লেগ স্পিনার রাবেয়া খাতুন।
পঞ্চাশ পেরোনোর আগেই ৪ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা ভারতের বিপদ বাড়িয়ে ৬১ রানের মাথায় বিদায় নেন জেমিমা রদ্রিগেজ। রাবেয়া খানের বলেই মুর্শিদাকে ক্যাচ উঠিয়ে দেন তিনি। তবে ৫ উইকেট হারিয়েও হাল ছেড়ে দেয়নি ভারত। ষষ্ঠ উইকেটে দলকে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করেন দীপ্তি শর্মা এবং আমানজৌত কৌর। ৩০ রানের জুটি গড়ে দলকে নিয়ে যাচ্ছিলেন জয়ের পথে।
এই জুটি যখন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিল তখনই আঘাত মারুফার। ২৯তম ওভারের পঞ্চম ও ষষ্ঠ বলে ফিরিয়ে দেন আমানজৌত এবং স্নেহ রানাকে। ৩০তম ওভারের প্রথম বলে দীপ্তি শর্মাকে ফিরিয়ে দলীয় হ্যাটট্রিক করেন রাবেয়া খান। ভারতের রান তখন ৯১। ১০২ রানের মাথায় নবম উইকেট হারায় ভারত।
এর আগে, প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশও। ১৪ রানের মধ্যেই হারিয়ে বসে শারমিন আক্তার এবং মুর্শিদা খাতুন। তবে তৃতীয় উইকেটে ফারজানা হক এবং অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি গড়েন ৪৯ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। ২০ ওভার ৫ বলে দলীয় ৬৩ রানের মাথায় ফেরেন ফারজানা (২৭)।
ফারজানা ফিরলেও একপ্রান্তে নির্ভরতার প্রতীক হয়ে দলকে আগলে রেখেছেন অধিনায়ক জ্যোতি। টি-টোয়েন্টি সিরিজের ফর্ম ধরে রেখেছেন ওয়ানডেতেও। চতুর্থ উইকেট হিসেবে ৮১ রানের মাথায় ফেরেন রিতু মনি। আর ১০৩ রানের মাথায় ৩৯ রানের ইনিংস খেলে ফেরেন জ্যোতি। মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কেউই উইকেটে তেমন থিতু হতে পারেননি। তবে নয়ে নামা সুলতানা খাতুন ২০ বলে ১৬ করলে ১৫২ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ। অলআউট হয় নির্ধারিত ৪৪ ওভারের মধ্যে ১ ওভার বাকি থাকতেই।
ভারতের হয়ে এদিন বল হাতে আগুন ঝড়ান তরুণ পেসার আমানজৌত কৌর। ৯ ওভার ৪ বলে ৩১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন ২৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। ২ উইকেট নিয়েছেন দেবিকা বৈদ্য।
দুই দলের মুখোমুখিতে এটিই বাংলাদেশের প্রথম জয়। এবারের আগের পাঁচবারের দেখায় প্রতিবারই জয়ের মুখ দেখেছে ভারত। সর্বশেষ গত বছরের বিশ্বকাপে ১১০ রানে জিতে ভারত। এদিকে চ্যাম্পিয়নশিপের সবার ওপরের দলও ভারত। এই ম্যাচের আগে খেলা ৬ ম্যাচের ছয়টিতেই জিতে সবার ওপরে তারা। অন্যদিকে এর আগে ৬টি ম্যাচ খেলার কথা থাকলেও চারটি পরিত্যক্ত হয়। সেই সুবাদে ৪ পয়েন্ট ছিল বাংলাদেশের। এবার ভারতকে হারিয়ে হলো ৬ পয়েন্ট।